নিউজ ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী বায়ুতে প্রবল বেগে দমকাসহ ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে ও প্রবল বর্ষণে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ো হাওয়া ও মৌসুমী বায়ু প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সেন্টমার্টিনের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
বাতাসের গতিবেগ এতই প্রবল যে, দাঁড়িয়ে থাকাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ঘর থেকে বাইরে যাওয়ারও সুযোগ নেই। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে দ্বীপবাসী। প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউপির সদস্য হাবিব খান জানান, গত শনিবার রাত থেকে বয়ে চলছে তুমুল বাতাস আর মুষলধারে বৃষ্টি। লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর গাছপালা, বাড়ির বাউন্ডারি। থেমে থেমে বাড়ছে বাতাসের গতিবিধি। সাগর উত্তাল। বাড়ছে জোয়ারের পানি। তলিয়ে যাচ্ছে আবাদী জমি। ফলে চিন্তিত হয়ে পড়েছে গোটা দ্বীপবাসী।
ভাঙন ধরেছে দ্বীপটির সব পয়েন্ট দিয়ে। লোনা হয়ে যাচ্ছে দ্বীপের প্রায় টিউবওয়েলের মিষ্টি পানি। একটু একটু করে প্রায় সাগর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে দ্বীপের একমাত্র গোরস্থান (কবরস্থান) রক্ষার উদ্যোগ নেই।
প্রায় ২০০ বছর আগে থেকে বসতি শুরু হয় দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমাটিনে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসসহ ভয়াবহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ টেকনাফ উপকূলে আঘাত হানলেও কখনো মনোবল ভাঙ্গেনি সেন্টমার্টিন-দ্বীপবাসীর।
কিন্তু সম্প্রতি এ দ্বীপে দু‘টি জলোচ্ছাসে আঘাত হানে এবং দ্বীপের চারপাশে ভয়াবহ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হওয়ায় নতুন করে ভাবনায় পড়েছে দ্বীপের প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দা। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ৮.৩ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটি দিন দিন ছোট হয়ে আসায় দেশের মানচিত্র থেকে দ্বীপটি হারিয়ে যাবে এমন আশংকায় উদ্বিগ্ন দ্বীপবাসীর।
সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসাইন জানান, বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে সাগরের লোনাপানি ঢুকে শাহপরীরদ্বীপ ও সাবরাংয়ের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অনেকে বসতবাড়ি ছেড়ে টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
এইদিকে টেকনাফে প্রবল দমকা বাতাসে প্রধান সড়কে গাছ পড়ে প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সওজ কর্মীরা দ্রুত এগিয়ে আসায় ৬ ঘন্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জানা যায়, শনিবার ভোরে প্রবল বৃষ্টি আর দমকা বাতাসে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মোচনীর দক্ষিণ পার্শ্বের বড় একটি শিশু গাছ প্রধান সড়কের উপরে পড়ে যায়। সকাল হলে স্থানীয় ও দূর পাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের লোকজন বিলম্বে হলেও দূর্যোগ পরিবেশে কাজ শুরু করে।
দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়কের যাতায়াত প্রতিবন্ধকতা দূর হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ আলী দমকা হাওয়ায় বড় গাছ পড়ে যানবাহন ব্যাহত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।
এই ব্যাপারে সওজের স্টক ইয়ার্ডে কর্মরত জামাল উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ এবং সওজের কর্মীরা দ্রুত গাছটি অপসারণ করে যান চলাচলের ব্যবস্থা করি।