কক্সবাজার : কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের মোহাম্মদ ইসমাঈলের মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলারের জালে ধরা পড়েছে ৩৩ কেজি ওজনের একটি পোপা মাছ। মাছটি বিক্রির জন্য দাম হাঁকানো হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত দাম উঠেছে তিন লাখ টাকা।
শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বুধবার ভোরে ফিশিং ট্রলারে মাছটি ধরা পড়ে। পরে দুপুর একটার দিকে ট্রলারটি টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
ফিশিং ট্রলারের মালিক মোহাম্মদ ইসমাঈল জানান, গত সোমবার মাছ ধরার জন্য শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ঘাট থেকে ১০ জন মাঝি নিয়ে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে সেন্টমার্টিন পশ্চিম সাগরে জাল ফেলেন তারা।
ভোরে জেলেরা জাল উঠাতে গিয়ে দেখেন, জালে কয়েকটি লাল কোরালসহ বড় একটি পোপা মাছ আটকা পড়েছে। মাছটি ট্রলারে তোলার পর মাঝি আমিন উল্লাহ বিষয়টি তাকে জানালে তিনি ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপে নিয়ে আসতে বলেন।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় স্থানীয় লোকজন মাছটিকে ‘কালা পোপা’ নামে জানেন। এ মাছের মূল আকর্ষণ হলো পেটের ভেতর থাকা পটকা বা বায়ুথলি (এয়ার ব্লাডার)। এই বায়ুথলি দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা হয়। এ জন্যই পোপা মাছের এমন চড়া দাম।
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী আমির আহমদ জানান, চলতি বছর এখানকার ফিশিং ট্রলারে আরও দুটি কালা পোপা মাছ ধরা পড়েছিল। এই মাছের পটকা থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে রফতানি হয়। তাই এই মাছের এত দাম চাওয়া হয়। এছাড়া মাছটি কেটে বিক্রি করলে প্রতি কেজি ৫৫০-৬৫০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।
তবে ট্রলার মালিক মোহাম্মদ ইসমাঈল জানান, স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী মাছটি ৩ লাখ টাকা দিয়ে কিনতে চেয়েছেন। তবে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তিনি মাছটি কক্সবাজারে পাঠিয়েছেন। বিদেশে মাছের পটকা রফতানি করেন এমন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।
টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, সাধারণত এত বড় পোপা মাছ ধরা পড়ে না। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম মিকটেরোপারকা বোনাসি (Myeteroperca bohaci)। পোপা মাছের বায়ুথলি বেশ মূল্যবান। এই মাছের বায়ুথলি দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা যায় বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মাছের চাহিদা রয়েছে।