এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশের পর্যটনের জন্য বিখ্যাত স্থান কক্সবাজারে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানকার সুপারি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে রপ্তানিও করা হয়। সুপারির বাজারদর ভালো থাকায় এই জেলার চাষিরা সুপারি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তার ফল হিসেবে প্রতিবছর এই জেলায় সুপারির চাষ বাড়ছে। বর্তমান বাজারদরে খুশি চাষিরা।
জানা যায়, আদিকাল থেকেই দেশে টেকনাফ-উখিয়ার সুপারির কদর রয়েছে। এবছর কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ১৩ হাজার মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে।
কৃষি বিভাগের মতে, উৎপাদিত সুপারির পাইকারি বাজারদর হিসেবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মেরিন ড্রাইভের মনখালী এলাকার জমির উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছর সুপারির ভালো ফলন হওয়ায় ভিটার পরিত্যক্ত জমিতে কিছু সুপারি গাছ লাগিয়েছি। এখন এই সুপারির গাছ থেকে বছরে প্রায় ৬-৮ লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করতে পারি।
উখিয়ার সোনারপাড়া এলাকার সুপারি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, আশ্বিন মাসের শেষের দিকে সুপারি বাজারে আসতে শুরু করে। উখিয়া-টেকনাফ সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি বাগানের খুব উপযোগী। এইসব এলাকার প্রতিটি পরিবারেই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বাণিজ্যিকভাবে শত শত একর জায়গায় সুপারি বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে। এই সব এলাকার সংগ্রহ করা পাকা সুপারিতে সয়লাব সোনারপাড়া, শাপলাপুর বাজার। মৌসুমি হিসেবে বসছে বাহারছড়ায় সুপারি বিকিকিনির বিশাল হাট।
ব্যবসায়ী শাকের উদ্দিন সাগর ও আবুল কালাম বলেন, এবছর বাজারে প্রতি পণ (৮০) সুপারি ৩০০-৪০০ টাকায়, প্রতি কাউন (১২৮০) ৪৫০০-৫৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের ভালো দরে চাষি থেকে ব্যবসায়ী সবাই খুশি।
উখিয়ার পান-সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুলতান আহমদ বলেন, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় সাত হাজারেরও বেশি পরিবার রয়েছে। এদের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কম-বেশি সুপারির চাষ হয়। এখানকার উৎপাদিত সুপারি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন আড়তে চলে যায়। সেখান থেকে সুপারি প্রক্রিয়াজাত হয়ে রপ্তানির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উন্নয়ন শাখার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার দে বলেন, কক্সবাজার জেলায় চলতি বছর ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে। এসব জমিতে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ সুপারির গাছ রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক কবির হোসেন বলেন, কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলে সুপারির ব্যাপক চাষ করা হয়। এবছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় এলাকাভিত্তিক সুপারি চাষ ক্রমে বাড়ছে। এ মৌসুমে প্রায় তিনশ কোটি টাকার সুপারি বিক্রির আশা করছি। আমরা কৃষকদের সবধরনের সহযোগীতা করে যাচ্ছি।