নেছার আহমেদ : টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনসার ব্যারাকে হামলায় জড়িত ছিল ৩৫ জন মুখোশধারী যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই থ্রিকোয়ার্টার প্যান্ট ও হেলমেটপরা যুবকরা অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। এরপর ফিল্মি স্টাইলে আনসার কমান্ডারকে হত্যা ও অস্ত্র গোলাবারুদ লুটপাট করে নিয়ে চলে যায়।
শুক্রবার ভোরে মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনসার ব্যারাকে মুখোশধারীদের সশস্ত্র ওই হামলার পর থেকেই পুলিশ ও বিজিবি যৌথভাবে অভিযান চালাচ্ছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) শ্যামল কুমার নাথ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে রাত ৮টা অবধি হামলাকারীদের ধরতে বা অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করতে পারেনি।
এদিকে, হামলাকারীদের গুলিতে নিহত আনসার কমান্ডার আলী হোসেনের (৫৫) মরদেহ এখনও মর্গে রয়েছে। তার স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছে। নিহত আলী হোসেন টাঙ্গাইলের শফিপুর উপজেলার বাসিন্দা মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত আনসার ব্যারাকের ইনচার্জ আলমগীর হোসেন বাংলামেইলকে জানান, মোচনী ক্যাম্পের পশ্চিমের পাহাড়ের সিওডি ব্লকে অবস্থিত শালবাগান আনসার ক্যাম্পে সশস্ত্র ডাকাত দল হামলা চালায়। এসময় ক্যাম্পের দায়িত্বরত কমান্ডার আলী হোসেনকে গুলি করা হয়। আলী হোসেনকে ক্যাম্প হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আনসার ব্যারাকের ইনচার্জ আরো জানান, ডাকাতরা ব্যারাক থেকে ১১টি অস্ত্র ও ৬৭০ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়। আনসার সদস্যরা ডাকাত দলের কয়েকজনকে চিনতে পেরেছে।
ঘটনার সময়ে সেন্ট্রির দায়িত্ব পালনকারী আনসার সদস্য অজিত বড়ুয়া বাংলামেইলকে জানান, আনসার ব্যারাকে হামলায় অংশ নেয় মুখোশ ও হেলমেট পরা অন্তত ৩৫ জন অস্ত্রধারী যুবক। তারা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে ওই হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়।
অজিত বড়ুয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই মুখোশধারী ও হেলমেট পরা সশস্ত্র যুবকরা তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। সবার পরনেই ছিল থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। তাকে বেঁধে রাখার পর তার পাশে অবস্থান নেয় ৪/৫ জনের একটি গ্রুপ। আর অন্য গ্রুপ ব্যারাকে ঢুকে অন্যান্য সদস্যদেরও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। এরপর ব্যারাকের দায়িত্বে নিয়োজিত কমান্ডার আলী হোসেনকে ধরে বাইরে নিয়ে এসে গুলি করে। ওই সময় তৃতীয় গ্রুপটি অস্ত্রাগারে ঢুকে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ লুট করে।
আনসার ভিডিপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ডার নির্মলেন্দু বিশ্বাস বাংলামেইলকে জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা ও লুট। এতে রোহিঙ্গা সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা জড়িত রয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) শ্যামল কুমার নাথ জানান, ঘটনার পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে ডাকাত দলের আস্তানা রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই স্থানটিকে টার্গেট করে ডাকাতদের ধরতে এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। -বাংলামেইল
১৪ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম