কক্সবাজার : শিশুটির বয়স মাত্র আট মাস। তার নাম মেহেদি হাসান রোশনি। মায়ের কোলেই পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে তাকে। নিষ্ঠুরভাবে। কক্সবাজারের চকরিয়ায় এমন নিষ্ঠুর হত্যাকা- চালিয়েছে এক অটোরিকশা চালক ও তার সহযোগিরা। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুটির মা এবং বাবা। শিশুটির বাবা মনজুর আলমের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার গারাঙ্গিয়া ইউনিয়নে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চকরিয়া পৌরশহরের ব্যস্ততম চিরিঙ্গা সোসাইটি বাঁশঘাটা রোডের মাথায় এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির হতভাগ্য বাবার অভিযোগ, রোশনিকে নিয়ে স্ত্রীসহ ১৫ দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা শেষে শনিবার রাত নয়টায় চকরিয়া পৌর বাসটার্মিনালে নামেন। সেখান থেকে তারা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে বাঁশঘাটা রোডস্থ কামাল ম্যানশনের ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাচালক বাসায় যাওয়ার সড়কে না ঢুকে তাদের সড়কের মাথায় নামিয়ে দেন।
এছাড়া নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি করেন। এ সময় সিএনজি চালকের সঙ্গে তাদের ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে চালক নাছির উদ্দিনের সঙ্গে তার ভাগ্নে ফয়সালও যোগ দেয়। মামা-ভাগ্নেসহ স্থানীয় আরও কয়েকজন মিলে মনজুর আলম ও তার স্ত্রীকে উপর্যুপুরি কিলঘুষি মারতে থাকেন।
স্থানীয়রা জানায়, এ সময় মা তার কোলের শিশুকে কিল-ঘুষি থেকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু মায়ের কোলে থাকা আট মাস বয়সী শিশু রোশনির ছোট শরীরেরও ওই দুর্বৃত্তদের বহু কিল-ঘুষি পড়ে। এতে মারাত্মকভাবে আহত হয় শিশু রোশনি। পরে তাকে পাশের স্থানীয় জমজম হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, অটোরিকশাচালক নাছিরউদ্দিন ঘটনাস্থলের পাশে পৌরশহরের লামার চিরিঙ্গার হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি স্থানীয় সন্ত্রাসীও। এজন্য আশপাশেরর লোকজন এ ঘটনা দেখেও এগিয়ে যেতে সাহস করেনি।
চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিশুটিকে দেখতে মনজুরের ভাড়া বাসায় যান তিনি। শিশু রোশনির খুনিদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি। নিহত শিশুর বাবা মনজুর আলম চকরিয়া পৌরশহরের সোসাইটি বাবুল শফিং কমপ্লেক্সের একজন ব্যবসায়ী। সেখানে তার একটি ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামের দোকান রয়েছে। এ কারণেই শিশু সন্তান রোশনি ও স্ত্রীকে নিয়ে শহরের বাঁশঘাটা রোডস্থ কামাল ম্যানশনের ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
১২ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম