গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ থেকে ৬শ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন সাঁওতালরা। ৬ নভেম্বরের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন সাঁওতালের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনার ১০ দিন পর ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু বাদী হয়ে বুধবার গভীর রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে, মামলা দায়ের করার পর বুধবার গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতাররা হলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমার ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল রশিদ, শাহনেওয়াজ, বাদশা মিয়া, চয়ন মিয়া ও সাগর মিয়া।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুই সাঁওতাল নিহত, সাঁওতালদের উপর হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরপর অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১৯৬২ সালে আখ চাষের জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ১ হাজার ৮৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ওইসব জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ আখ চাষ না করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর কাছে লিজ প্রদান করে।
তারা লিজ নেয়ার পর ওইসব জমিতে তামাক, ধান, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করতে থাকে। এছাড়া এসব জমিতে ১২টি পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালীরা।
এদিকে মিলের জমিতে আখ চাষ না হওয়ায় দুইবছর আগে এসব জমি ফেরৎ দেয়ার কথা বলে প্রভাবশালী নেতারা সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজনকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করে।
চলতি মাসের ৬ তারিখে পুলিশ-ইক্ষু শ্রমিক ও সাঁওতালদের সঙ্গে ত্রি-মূখী সংঘর্ষে তিন সাঁওতালের মৃত্যু হয়। আহত হয় ৯ পুলিশসহ ৩০ জন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত চার সাঁওতাল গ্রেফতার হয়েছে। -জাগো নিউজ।
১৭ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম