মোঃ মামুনুর রশিদ মন্ডল, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ঘাঘট ও করতোয়াসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি এখন বিপদসীমার ১০ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া করতোয়া, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমা ছুই ছুই করছে এখন।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদী সংলগ্ন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় এখন পানি উঠেছে এবং প্রায় ৪০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অপরদিকে ঘাঘটের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা ও সর্বানন্দ ইউনিয়নের ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এদিকে সর্বানন্দের ঘাঘট নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি যে কোন মুহুর্তে ধ্বসে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকার আমন বীজতলা, বর্ষালী ও আউশ ধান, পটল ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
পানিবন্দী এলাকার লোকজন জানান, বন্যায় হাটু ও কোমর পানিতে ডুবে যাওয়ায় মাচা করে থাকতে হচ্ছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও মলমুত্র ত্যাগের সমস্যায় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নও এখন বন্যা কবলিত। ফুলছড়ির সিংড়িয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই মিল্টন জানান, ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য জরুরী ভিত্তিতে ১৫টি ইউনিয়নে ১২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যা কবলিত মানুষ এবং তাদের গবাদী পশুকেও আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এসব বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য আপাতত ৫ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ জানান, ইতোমধ্যে বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য ১০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৪ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া করতোয়ার পানি ৫৯ সে. মি., ঘাঘট নদীর পানি ৪৮ সে. মি. বৃদ্ধি পেলেও এখনো ও দুটি নদীর পানি বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রয়েছে।
২৪ আগস্ট, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস