মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬, ১০:৫৫:০৬

স্ত্রীকে খুন করার পর লাশ পুকুরে ফেলে দিল স্বামী

স্ত্রীকে খুন করার পর লাশ পুকুরে ফেলে দিল স্বামী

গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় এক গৃহবধূকে হত্যার পর পুকুরে লাশ ফেলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। হতভাগা ওই নারীর নাম মোছা. মনিরা আকতার ময়না (৩২)। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী লুৎফর রহমান, শ্বশুর নবির হোসেন ও তার বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন।

খবর পেয়ে পুলিশ সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম খামার দশলিয়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে। ওইদিন দুপুরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানায়।

মনিরা আকতার ময়না সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের খামার দশলিয়া গ্রামের মো. নবির হোসেনের ছেলে কসমেটিক্স ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমানের স্ত্রী ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের সুবর্ণদহ গ্রামের মো. মফিজুল হকের মেয়ে।

প্রতিবেশী ও ময়নার পরিবার জানান, ২০০৩ সালে ময়নার সঙ্গে লুৎফরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এর মধ্যে ময়না শারীরিক প্রতিবন্ধী একটা মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। ১৩ বছর বয়সের মেয়েটি তার নানা বাড়িতে থাকে। দাম্পত্য জীবনে লুৎফর প্রায়ই ময়নাকে মারপিট করতেন। এসব বিষয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়।

এর মধ্যেই ময়নার ঘরে চার সন্তানের জন্ম হয়। সোমবার দুপুরে ময়না বাবার বাড়িতে বেড়াতে যেতে চাইলে লুৎফরের সঙ্গে ঝগড়া ও তাকে মারপিট করার শব্দ শোনা যায়। এরপর থেকে ময়নাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের পুকুরে লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ময়নার লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা।

ময়নার বড় ভাই মো. রুবেল মিয়া অভিযোগ করেন, সম্প্রতি ঢাকায় লুৎফর রহমান দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। গত ছয় মাস ধরে তিনি নতুন বউকে ঘরে তোলার জন্য ময়নাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ময়না তাতে রাজি হয়নি। এ কারণে তার বোনকে মারপিট বা শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে পালিয়েছে লুৎফর ও তার পরিবারের লোকজন। বোনের হত্যার বিচার চেয়ে আমি থানায় হত্যা মামলা করব।

সাদুল্যাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করীম জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের সময় তার নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। পুকুরে লাশ ভাসতে থাকলেও পেটে পানি ছিল না। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মঙ্গলবার সকালে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরহাদ ইমরুল কায়েস বলেন, ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক আছে।
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে