মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬, ০৭:৩৪:১২

পুলিশ হটাতে সাঁওতালদের তীর ধনুক

 পুলিশ হটাতে সাঁওতালদের তীর ধনুক

গাইবান্ধা : জমি উদ্ধারকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও সাঁওতাল সম্প্রদায় মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।  পুলিশ হটাতে তীর ধনুক নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছে সাঁওতালরা।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে তারা এ অবস্থান নিয়েছে।

জেলার মহিমাগঞ্জস্থ রংপুর চিনিকলের আনসার, পুলিশ ও র‌্যাব যৌথভাবে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ইক্ষু খামারের দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার করতে গেলে এ পরিস্থিতি দেখা দেয়।

উপজেলার মহিমাগঞ্জস্থ রংপুর চিনিকলের (রচিক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল জানান, মিলের অধীনস্থ সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১ হাজার ৮শ' ৪২ দশমিক ৩০ একর জমির রয়েছে।  

তিনি জানান, জমিগুলো বাপ-দাদার দাবি করে সাঁওতাল, খ্রিস্ট্রান, সনাতন ও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন গত ১১ দিনে ইক্ষু খামারের মাদারপুর, জয়পুর, নরেঙ্গাবাদ, চক রহিমাপুর ও রামপুরাসহ ৫ গ্রামের প্রায় ১ হাজার একর জমি দখলে নিয়ে ঘরবাড়ি গড়ে তোলে।  এর মধ্যে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন বেশি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে আনসার, পুলিশ ও র‌্যাব যৌথভাবে বেলা দুপুরের দিকে নরেঙ্গাবাদে যায়।  

এ সময় তারা ইক্ষু খামারের জমি থেকে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ঘরবাড়ি উচ্ছেদের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তারা নরেঙ্গাবাদের কয়েকটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন।

এতে সাঁওতাল সম্প্রদায়সহ অন্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে তীর ধনুক নিয়ে প্রশাসনের মুখোমুখি হন।  এ সময় পুলিশ ও র‌্যাব বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে।  সাঁওতালরা তীর ছুঁড়লে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রশাসন সেখানে আছে। সাঁওতালরাও প্রতিরোধ বলয় তৈরি করে রেখেছে।

মাদারপুরে গড়ে ওঠা সাঁওতাল পল্লীর ভোবেন মার্ডী জানান, প্রশাসনের লোকজন হঠাৎ অভিযান চালিয়ে নরেঙ্গাবাদের দুটি শ্যালো মেশিনের ঘরসহ তাদের কয়েকটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়।  ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে তারা তীর ধনুক নিয়ে বেরিয়ে আসেন।  

ওই পল্লীর মিনাজ জানান, এ ঘটনার পর তীর ধনুকের ঝনঝনিতে অপর ৪ সাঁওতাল পল্লীতে যেতে পারেনি প্রশাসন।  নরেঙ্গাবাদ সাঁওতাল পল্লী থেকে প্রশাসন সরে এসে গোবিন্দগঞ্জ-ঘোড়াঘাট সড়কের কাটামোড়ে অবস্থান নিয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আনসার পুলিশ ও র‌্যাব কাজ করছে।  

এ পর্যন্ত কী পরিমাণ রাবার-বুলেট ও টিয়ার শেল ছোড়া হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে