যশোর: যশোরের বেনাপোলে পরকীয়ার টানে আট বছরের মেয়েকে ও দেড় বছরের এক শিশুকে চায়ের দোকানে ফেলে পালিয়ে গেছেন মা। তবে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ বাবার কাছে হস্তান্তর করেছে।
শনিবার (৩ মার্চ) বিকালে বেনাপোল পোর্ট থানার পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার বাবার হতে তুলে দেয়। এর আগে গত শুক্রবার (২ মার্চ) শিশুটির মা মুন্নি বেগম তাকে বেনাপোল বাজারের একটি চায়ের দোকানে সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে পালিয়ে যান।
পুলিশ ও শিশুর প্রতিবেশীরা জানান, বাগেরহাটের পিন্টু শেখের মেয়ে মুন্নির সঙ্গে বিয়ে হয় নড়াইলের কালু শেখের। তবে বর্তমানে তাদের বসবাস বেনাপোলের সীমান্তবর্তী সাদিপুর গ্রামে। পিন্টু শেখ পেশায় ফুটপাতের সিঙ্গারা বিক্রেতা। গত ৮ বছরের সংসারে জন্ম নেয় দুই ছেলে-মেয়ে।
তারা আরো জানান, শুক্রবার বিকালে বেনাপোল বাজারে তোফাজ্জেল হোসেন নামে এক চায়ের দোকানের সামনে মুন্নী তার দেড় বছরের শিশু আলিফ হাসানকে দাঁড় করিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। পরে শিশুটি কান্না শুরু করলে দোকানদার তার মাকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ শিশুটি উদ্ধার করে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করলে তার বাবা থানায় এসে শিশুটিকে নিয়ে যান।
শিশুটির প্রতিবেশী রাজমহন জানান, শিশুকে লালন-পালন করতে না পারলে পরিচিত কারোর মাধ্যমে বাবার কাছে দিয়ে দিতে পারত। কিন্তু রাস্তায় ছেড়ে যাওয়া উচিৎ হয়নি। এতে বিপদ ঘটতে পারত। একজন মায়ের কাছ থেকে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত।
শিশুর বাবা কালু মিয়া জানান, তার স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত ছিল। সে আমার সংসার করবে না বলে পূর্বে কয়েকবার জানায়। বিষয়টি ঠিক হয়ে যাবে বলে আমি প্রতিউত্তর করিনি, বরং তাকে বুঝিয়েছি। শুক্রবার আমার অজান্তে আমার ৮ বছরের মেয়েকে বাড়িতে রেখে, দেড় বছরের বাচ্চাটিকে নিয়ে কোনো এক সময় বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে তার স্ত্রী তাকে ফোন করে বলে ছেলে আলিফকে বেনাপোল বাজারে এক চায়ের দোকানের পাশে রেখে দিয়েছে। পারলে খুঁজে নিতে। কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গা না বলায় বাজারের এসে পাননি তিনি। শেষে পরিচিত জনদের মাধ্যমে ফেসবুকে ছবির কথা শুনে পুলিশের কাছে গিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে আনেন তিনি।
বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ জানান, শিশুটির মা পরিকল্পিতভাবে তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। শিশুটির বাবা থানায় এসে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে নিয়ে গেছে।