দীর্ঘ ৩ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক করেও অবশেষে বিয়েতে রাজী না হওয়ায় মানসিক কষ্টে জিহাদী (২৪) নামে এক প্রেমিক গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শুক্রবার (০৪ জুন) সকাল ১১টায় প্রেমিক জিহাদীর নিজ গ্রাম বেনাপোলের সাদিপুরে তাকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
আত্মহত্যার ঠিক আগ মুহূর্তে গত বুধবার (০২ জুন) বিকেলে জিহাদী চট্টগ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে গলায় রশি লাগিয়ে ভিডিওকলে প্রেমিক সানজিদা হক মিমকে জানায় তাকে বিয়ে না করলে সে আত্মহত্যা করবে। কিন্তু এতে কিছু যায় আসে না বলে অস্বীকৃতি জানিয়ে মতামত জানায় মিম।
জিহাদী বেনাপোল পৌরসভার সাদিপুর গ্রামের তাহের আলীর ছেলে এবং চট্টগ্রামে এম, এম, ইন্টার প্রাইজ নামে একটি সিএন্ডএফ এজেন্টে কাজ করতো। অপরদিকে মিম যশোরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনার্সের ছাত্রী।
জিহাদীর মামা ইব্রাহিম শেখ জানান, জিহাদী ও মিম এরা পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় তিন বছর তার ভাগ্নে জিহাদীর সঙ্গে মিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের জের ধরে একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ছিল স্বজনদের। মিমকে তারা ভাগ্নের সাথে বিয়ে দিতেও ইচ্ছা প্রকাশ করে। ভাগ্নে চাকরির কারণে চট্টগ্রাম থাকে আর মিম যশোরে লেখাপড়া করায় তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রায়ই কথাবার্তাও হতো।
চট্টগ্রাম থেকে মিমকে লেখাপড়ার খরচও দিত সে। মিম একাধিক ছেলেদের সঙ্গে প্রেম করে জানতে পেরে ভাগ্নে নিষেধ করে। কিন্তু মিম গুরুত্ব না দেওয়ায় এক পর্যায়ে গলায় রশি লাগিয়ে মিমের কাছে জানতে চায় বিয়ে করবে কিনা। ভিডিওকল দিয়ে জানতে চায় তুমি আমাকে বল আমাকে বিয়ে করবে কিনা।
কিন্তু আত্মহত্যা করলে তার কিছু যায় আসে না বলে জানিয়ে দেয় মিম। এরপর সে আত্মহত্যা করে। মেয়েটির এমন আচরণে তার ভাগ্নের অকালে প্রাণ গেছে। এর বিচার চেয়েছেন তিনি। যাতে আর কারোর এমন প্রতারণায় অন্য কারও জীবন না যায়।
এদিকে, মিমের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সে বলে তার সাথে দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি সে সিগারেট খাচ্ছে এমন কথা শুনে তাকে না বলা হয়েছে অভিমান করে। কিন্তু এতে সে সত্যি সত্যি আত্মহত্যা করবে সে ভাবতে পারেনি।
মিমের বাবা সেলিম হক বলেন, মেয়ের সাথে জিহাদীর প্রেমের সম্পর্ক আছে জানি। ছেলেও অনেক ভালো। তার সাথে বিয়েতে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। মেয়ের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন সিগারেট খাওয়া নিয়ে সামান্য বিষয়ে কথা কাটাকাটি নিয়ে অভিমানে সে আত্মহত্যা করে।