বুধবার, ০৬ মার্চ, ২০২৪, ০৯:০৩:২০

কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীরা

কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীরা

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : অবসরে যাওয়া স্কুলের এক প্রধান শিক্ষককে পা ধুইয়ে বর্নিল সাজে সজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে করে পৌঁছে দেওয়া হলো তার বাড়িতে। বিদায় বেলায় অঝোরে অশ্রু ঝরালেন বিদায়ী শিক্ষক থেকে শুরু করে কোমলমতি শিশু ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। 

যশোর সদরের পূর্বআবাদ কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এ বর্নিল শিক্ষক বিদায় আয়োজন করে। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ অনুষ্ঠানটি করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পূর্বআবাদ কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনূর রহমানকে বিদায় সংবর্ধনা জানাতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তার পা ধুইয়ে গামছা দিয়ে মুছে দেন। এরপর কোলে করে রঙিন বেলুন আর ফুলে সজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে উঠান। তারপর শোভাযাত্রা সহকারে পৌঁছে দেয় বাড়িতে। এসময় প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন শাহিনূর রহমান। ২০১৩ সালে স্কুল সরকারিকরণের আগে তিনি বিনা বেতনে শিক্ষকতা করেছেন। একবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘ শিক্ষা জীবনে শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো স্নেহ মমতায় বড় করে তুলেছেন। বিদায় বেলায় তার স্বীকৃতিও পেলেন। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ফিরলেন অবসর জীবনে। 

শিক্ষার্থীদের দাবি প্রিয় শিক্ষকের বিদায়ক্ষণটি স্মরণীয় করে রাখতেই ফুলেল শুভেচ্ছা, বিভিন্ন উপহারসামগ্রী এবং সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি চড়িয়ে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে। 

জামান সরদার নামে এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শাহিনুর স্যারের কাছ থেকে যে শাসন পেয়েছি সেটাই আজ আমাদের আলোকিত করেছে। স্যারের শাসনের মধ্যে অন্যরকম একটা স্নেহ মমতা ছিল।

ইব্রাহিম হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, 'স্যার আমাদের নিজের ছেলে-মেয়ের চোখে দেখেছেন। কখনো আমাদের মনে হয়নি স্যার আমাদের দূরের কেউ।'

পলি আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, স্যারের পাঠদানের স্মৃতি ভোলার নয়। গ্রামের অনেক মানুষকে তিনি শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছেন। তার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেকেই আজ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা।

এমন সংবর্ধনা পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন অবসরে যাওয়া শিক্ষক শাহিনূর রহমান। অশ্রু ঝরিয়ে তিনি বলেন, আমার তিন দশক শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। শেষ দিনে আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, এটি আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া। আমি আর কখনো এ বিদ্যালয়ে আসবো না।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে