এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গত ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভ্যান গাড়িতে সবজি বিক্রি করেন হারুন অর রশীদ হাওলাদার (৬৮)। সবজি বিক্রির টাকায় চলে তার ৬ সদস্যের সংসার। সব খরচ বাদ দিয়ে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে হজে যাওয়া ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু, সেই ইচ্ছা থেকে সরে আসেন হারুন। এলাকাবাসীর নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করতে এবং বেশি সওয়াব পাওয়ার আশায় সঞ্চিত অর্থ দিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন একটি মসজিদ।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের রামপুর এলাকার মৃত মেনাজ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে হারুন অর রশিদ হাওলাদার। নিজ এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করে সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।
হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, সবজি বিক্রি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি অল্প অল্প করে টাকা সঞ্চয় করি। পরে ওই আড়াই লাখ টাকা এবং সঙ্গে আরো কিছু টাকা যোগ করে রামপুর এলাকায় নিজের জমিতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার এলাকা এবং আশেপাশের অনেক গ্রামে কোনো মসজিদ নেই। ফলে আমাদের বাউকাঠি বাজারে গিয়ে নামাজ পড়তে হয়। অনেক সময় ঝড় বৃষ্টিতে এখানকার মুসল্লিদের নামাজ পড়তে যেতে কষ্ট হয়। এই মসজিদটি নির্মাণের কারণে আমাদের এখানকার মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের কষ্ট কমে যাবে।
হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, শুরু থেকে এই মসজিদ নির্মাণে কারো সহযোগিতা নেওয়া হয়নি। এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে যেমন- মসজিদের টাইলস, অজুখানা, ঘাটলা, ফ্যান, মাইক, মসজিদের সামনে একটা বারান্দা, হুজুরের থাকার জন্য একটা কক্ষ। যদি কেউ সহযোগিতা করেন তাহলে বাকি কাজগুলো করতে পারবো।
মসজিদের মুসল্লি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের আশেপাশে কোনো মসজিদ ছিলো না। যে মসজিদ আছে সেখানে যেতে এবং ফিরে আসতে ২০ টাকার বেশি খরচ লাগে। হারুন ভাই আমাদের এখানে মসজিদ করায় আমাদের নামাজ পড়তে যেতে কষ্ট হবে না।আমরা তার জন্য দোয়া করি।
ঝালকাঠি ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল কাইউম বলেন, বিষয়টি আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। একজন সবজি বিক্রেতা মসজিদ নির্মাণ করেছেন আসলেই এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।