মো. আতিকুর রহমান: ঝালকাঠির নলছিটিতে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ) না থাকায় সেতুতে উঠতে হচ্ছে বাঁশের মই দিয়ে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।
উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের মজকুনী গ্রামের বাইতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত হয়েছে এ সেতুটি। উপজেলার সুবিদপুর ও কুশঙ্গল ইউনিয়নের সংযোগ সেতু এটি।
জানা যায়, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এক বছর আগে। ঠিকাদারকে কাজের বিলও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ করা হয়নি। এতে দুই ইউনিয়নের মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২১ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি একদিকে সুবিদপুর ইউনিয়নের বাইতারা অন্যদিকে কুশঙ্গল ইউনিয়নের সরমহল গ্রামকে যুক্ত করেছে। সেতুর সামনে রয়েছে বাইতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ শতশত পথচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের মই বেয়ে সেতুতে উঠানামা করছেন। এতে অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স সেতুটির নির্মাণ কাজ করে। এক বছর আগে নির্মিত এ সেতুর অ্যাপ্রোচের বালি ভরাটের কাজ ফেলে রেখেছে তারা। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করলেও দুর্ভোগের বিষয় নিয়ে উদাসীন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে গত ৫ আগস্টের পরে ওই ঠিকাদারকে দেখা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
বাইতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোসা. হাওয়া আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির অ্যাপ্রোচের বালু ভরাটের কাজ এভাবেই ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রতিনিয়ত অভিভাবকদেরও দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে।
তালতলা বিজি ইউনিয়ন অ্যাকাডেমির দশম শ্রেণির ছাত্র মো. সোহান হাওলাদার বলেন, সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে এক বছর আগে, কিন্তু আমরা এখনো বাঁশের মিই দিয়ে ওঠানামা করি। এটি খুব বিপজ্জনক।
এলাকাবাসী জানান, তালতলা বাজার এই অঞ্চলের অন্যতম বড় বাজার। প্রতিদিন সেতু পার হয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে এ বাজারে আসা-যাওয়া করতে হয়। কিন্তু সেতুর দুই দিকের সংযোগ সড়ক না থাকায় ভ্যান বা অন্য যানবাহনে মালামাল নিয়ে পার হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে দূরের পথ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হানিফ খান বলেন, এই সেতুটি অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। বাইতারা অংশে মূল সড়কটি সেতুর কার্নিশ দিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়কের কাজ না করলে এই সেতুর সুফল আমরা ভোগ করতে পারবো না। দ্রুত সেতুটির অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইকবাল কবীর বলেন, ঠিকাদারকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে আমি কাজের স্থানে যাবো।
সেতুর এপ্রোচের কাজ শেষ না হওয়ার আগে কাজের সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ হলো কীভাবে প্রশ্নে তিনি বলেন, সিকিউরিটি মানি এখনও রয়েছে। এটি কত টাকার কাজ এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি আমি বলতে পারব না। এস এ ই (সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার) মইনুল আজমের সঙ্গে কথা বলুন।
এস এ ই মো. মইনুল আজম বলেন, সেতুর অ্যাপ্রোচে দ্রুত বালি ভরাট করে দেওয়া হবে। সেতুটি নির্মাণে ৪০ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে।-জাগো নিউজ