ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে বিয়ের দাবিতে রোববার প্রেমিকের বাড়িতে দিনভর অনশন করেন প্রেমিকা রাজিয়া খাতুন (২১)। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক যদি প্রেমিক বিয়ে না করেন তাহলে প্রেমিকের বাড়িতেই আত্মহননের হুমকি দেন। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে অনশন ভঙ্গ করেন রাজিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
বিয়ের দাবিতে অনশন করা প্রেমিকা রিজিয়া খাতুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার একতারপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের মেয়ে। প্রেমিক সেনা সদস্য শিমুল হোসেন একই গ্রামের মো. শহিদের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও পরিবারের ভয়ে মেনে নিতে পারছে না প্রেমিক শিমুল হোসেন। রিজিয়া খাতুন শিমুলের কাছে একাধিক বার বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিভিন্ন কৌশলে শিমুল এড়িয়ে যান এবং তালবাহানা শুরু করেন। রিজিয়া বুঝতে পারে শিমুল তাকে বিয়ে না করার জন্য এভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে। তখন সে এ রকম সিদ্ধান্ত নেয়। নিজ বাড়িতে রিজিয়ার অনশনের খবর পেয়ে শিমুল বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যোগ দেয়ার নাম করে বাড়ি থেকে চলে যায়। এ সময় গ্রামের লোকজন জড়ো হলে মেয়েটি তার প্রেমের বিষয়টি খুলে বলে। খবর পেয়ে আজ দুপুরে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানোর চেষ্টা করে। মেয়েটি বাড়ি ফিরে যেতে অস্বীকার করলে প্রেমিক শিমুলের বাবা, আত্মীয়স্বজন, রিজিয়া ও তার বাবার কাছে ১০ দিনের সময় নিয়ে রিজিয়াকে তার বাবার হাতে তুলে দেয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, প্রেমিক শিমুল ও প্রেমিকা রিজিয়ার পরিবার এবং এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে রিজিয়াকে শিমুলের সাথে ১০ দিনের মধ্যে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
রিজিয়া জানান, এর আগে আমার একটা বিয়ে হয়েছিল। সেখান থেকে শিমুলের কারণে ডিভোর্স হয়ে যায়। শিমুল আর আমার সম্পর্ক প্রায় ৫-৬ বছরের। শিমুলই অনেকদিন ধরে আমাকে বার বার প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি আগে তাকে পাত্তা দিতাম না। পরে সে আমাকে বিভিন্ন প্রলোভনে প্রলুব্ধ করে এবং বলে আমি সেনাবাহিনীতে চাকরি করি। আমি তো বেকার না। যদি আমার পরিবার তোমাকে মেনে না নেয়, তাহলে আমি তোমাকে নিয়ে চলে যাব।
সে আরও জানায়, শিমুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ ও যশোরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতো এবং আমরা একইসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। শিমুলের কথামতো আমি শিমুলের বাড়ি গিয়ে অনশন করি। সে আমাকে বলেছিল তুমি আমাদের বাড়িতে গিয়ে ওঠো তাহলে আমার পরিবার তোমাকে মেনে নেবে। আমি তার বাড়িতে ওঠার পর থেকে শিমুল গা ঢাকা দিয়েছে। আমাকে যদি সে বিয়ে না করবে তাহলে সে এভাবে আমার জীবনটা কেন নষ্ট করে দিলো? প্রায় ৩-৪ বছর ধরে আমার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন যদি এই ১০ দিনের মধ্যে শিমুল আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আমি শিমুলের বাড়িতে আত্মহত্যা করবো।
এ ব্যাপারে শিমুলের বাবা শহিদুলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমি আগে কিছু জানতাম না। রিজিয়া আমাদের বাড়িতে আসার পর বিষয়টি আমি জানলাম। এখন এলাকার মানুষ ও রিজিয়ার পরিবারের নিকট থেকে ১০ দিন সময় নিয়ে রিজিয়াকে তার বাবার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। দেখি ১০ দিনের ভিতর কোনও সমাধান হয় কি না।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।