ঝিনাইদহ থেকে : ঝিনাইদহ পৌর এলাকার মথুরাপুর গ্রামে শাপলা খাতুন (২১) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। গত বুধবার তিনি গলায় ফাঁস নেন। এরপর স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার পর ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে শাপলা খাতুনের মৃত্যু হয়।
ঢাকা থেকে শনিবার দুপুরে লাশ সদর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে আনা হয়। এরপর লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। শাপলা ঝিনাইদহ পৌর এলাকার মথুরাপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে নয়নের (২৮) স্ত্রী।
নিহতের পরিবারের দাবি, শ্বশুরের লাম্পট্য ফাঁস করে দিলে স্বামী শাপলাকে নির্যাতন করেন। সেই অভিমানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনার পর থেকে শ্বশুর নাসির উদ্দিন, ছেলে নয়নসহ পরিবারের সদস্যরা পলাতক।
নিহতের বাবা সিরাজ উদ্দীন জানান, তিন বছর আগে নয়নের সঙ্গে শাপলার বিয়ে দেন। কিছুদিন পরই তার শ্বশুরের চরিত্র সামনে আসে। মেয়েকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। স্বামীকে বললেও সে বিশ্বাস করতো না। এক পর্যায়ে শাপলা বাপের বাড়ি চলে আসেন। শ্বশুর বাড়িতে আর যাবেন না বলে জানান। কিন্তু, পরিবারের সদস্য অনেক বুঝিয়ে এবং স্বামীর আশ্বাসে তিনি ফিরে যান।
সিরাজের ভাষ্যে, এরই মধ্যে গত বুধবার শাপলার শাশুড়ি তার মেয়ে বাড়ি বেড়াতে যান। সুযোগ বুঝে শ্বশুর নাসির শাপলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এতে বাবার সম্মানের কথা বিবেচনায় নিয়ে শাপলার ওপর ক্ষিপ্ত হয় নয়ন। স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করে।
শ্বশুরের লালসা থেকে বাঁচতে এবং স্বামীর মারধরে অভিমানে ঘটনার দিন রাতেই ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস নেন শাপলা। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাপলা।
স্থানীয় নারী মেম্বর লাকী খাতুন জানান, জেনেছি শাপলার ওপর এমন অত্যাচার আগেও হয়েছে। কিন্তু, নরম স্বভাবের হওয়ায় সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করেছেন। এবার অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন।
ঝিনাইদহ পৌরসভার কাউন্সিলর ও মথুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা মহিউদ্দীন জানান, শুনেছি শ্বশুরের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে লজ্জা-অপমানে শাপলা খাতুন আত্মহত্যা করেছেন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান জানান, শাপলার মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।