ঝিনাইদহ : সৌদি আরব প্রবাসী মেয়ে রত্না খাতুনের পাঠানো টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন রোকেয়া বেগম। পথে প্রতারকচক্র তাকে বলে- আপনার কাছে যে টাকা আছে সেই টাকা আমাদের কাছে দিলে আপনার টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এর জন্য আপনাকে ৪১ কদম হাঁটতে হবে।
দাড়ি মুখে, সাদা পাঞ্চাবি গায়ের লোকটিকে দেখে রোকেয়া খাতুন ভড়কে গিয়ে তার হাতে টাকা তুলে দেন। এরপর তার ৩০ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে সটকে পড়ে প্রতারকচক্র। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শাখা জনতা ব্যাংকের নিচের মার্কেটের সামনে।
প্রতারণার শিকার রোকেয়া বেগম উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের রাঢ়িপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি ফয়লা পৌর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
রোকেয়া বেগম বলেন, শহরের জনতা ব্যাংক থেকে মেয়ের পাঠানো টাকা উত্তোলন করে সিঁড়ি থেকে নিচে নেমে আসতেই তিন প্রতারক আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। তাদের মধ্যে একজন আমাকে খালাম্মা সম্বোধন করে ডাক দেয়। এরপর দাঁড়িয়ে থাকা বয়স্ক প্রতারককে সালাম দিতে বলে। আমি সালাম দিলে সে বলে- আজকে আপনার মনের আশা পূরণ হবে। সাথে সাথে আমার মুখের সামনে একটি পাথর ঘুরিয়ে আমার কাছে যে টাকা আছে তা বের করতে বলে।
তিনি বলেন, সে আরও বলে- টাকাগুলো তার হাতে দিয়ে ৪১ কদম পা বাড়ালেই টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। যা আপনাকে দেয়া হবে। তাদেরকে আমি বিশ্বাস করিনি কিন্তু ওই সময় আমি স্বাভাবিক ছিলাম না। আমি কোনো কথা বলতে পারছিলাম না। পাথরটা আমার সামনে ধরার পর তারা যা বলেছে আমি তাই করেছি।
রোকেয়া বেগম আরও বলেন, একপর্যায়ে আমি দেখছি টাকা নিয়ে প্রতারকরা চলে যাচ্ছে; তারপরও চারপাশের দোকানগুলোতে লোকজন থাকলেও আমি তাদেরকে জানাতে পারিনি। কিছুক্ষণ পর আমি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে লোকজনকে জানালে তারা আমাকে থানায় পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে পুলিশ এসে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে কাউকে না পেয়ে আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
প্রতারণার শিকার রোকেয়া বেগমের পুত্রবধূ রুমা খাতুন বলেন, আমার শাশুড়ি এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি। তার কথা মাঝে মধ্যে আটকে যাচ্ছে। টাকা তুলতে তাকে একা পাঠানো ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক এম এ করিম বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাংক এরিয়ার বাইরে। ফলে আমাদের কিছু করার নেই।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুচ আলী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা প্রতারকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করবো।