শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০, ০৬:০৪:৩০

খাটিয়া জোটেনি, বাঁশ কাটতে দেয়নি গ্রামবাসী, অ্যাম্বুলেন্সে জানাজা

খাটিয়া জোটেনি, বাঁশ কাটতে দেয়নি গ্রামবাসী, অ্যাম্বুলেন্সে জানাজা

ঝিনাইদহ: করোনাভাইরাসে মৃ'ত ব্যক্তির ম'রদে'হ খাটিয়ায় তু'লতে দেয়া হয়নি; এমনকি বাঁশ-খুঁটিও কা'টতে দেয়নি এলাকাবাসী। বলা হলো, এই মৃ'ত্যু নাকি পাপের ফসল। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামে এ অমা'নবিক ঘ'টনা ঘ'টে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফি উদ্দিনের ছেলে গোলাম সরোয়ার মোর্শেদ (৫২) দুই সন্তানের জনক। বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন তিনি। দুই বছর আগে প্যা'রালা'ইজড হন মোর্শেদ। কয়েক মাস আগে সুস্থ হন। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস'র্গ দেখা দিলে ২৯ জুন শৈলকুপায় আসেন তিনি। পরে পরীক্ষার জন্য নমু'না দেন। রিপোর্ট পজিটিভ আসায় ১ জুলাই ভর্তি হন কুষ্টিয়া সরকারি হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবন'তি হলে পরদিন ভর্তি হন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

শনিবার (০৪ জুলাই) দুপুরে ওই হাসপাতালে তার মৃ'ত্যু হয়। ওই দিন রাতে তার ম'রদে'হ অ্যাম্বুলেন্সযোগে শৈলকুপার বাড়িতে আনা হয়। ম'রদে'হ বাড়িতে এনে দা'ফন কাফনে ভো'গান্তি'তে পড়েন স্বজনরা। গ্রামবাসীর বা'ধায় মেলেনি খা'টিয়া। এমনকি দা'ফনের জন্য বাঁশ-খুঁটি কা'টতেও বাধা দেয় স্থানীয়রা। গ্রামবাসীর ভাষ্য, এটি মৃ'তের পাপের ফল।

এ অবস্থায় গভীর রাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাকের ত'ত্ত্বাবধানে কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্সে মৃ'তের জানাজা পড়ানো হয়। পরে দা'ফন-কা'ফন সম্পন্ন করা হয়।

মৃ'তের মেয়ে সুমাইয়া বলেন, ‘গ্রামবাসী বলল- এটি আব্বুর পাপের ফসল। আব্বু নাকি কোনো একটা পাপ করেছেন। যার জন্য করোনায় ম'রে পাপের শা'স্তি পেয়েছেন। এজন্য জানাজা আর দা'ফন-কা'ফনে অংশ নেয়নি গ্রামবাসী। এমনকি ক'বরের জন্য বাঁশ-খুঁ'টিও কাটতে দেয়নি তারা।’

সরোয়ার মোর্শেদের স্ত্রী ফারজানা খাতুন বলেন, করোনাভাইরাস তো বৈশ্বিক ম'হামা'রি। মৃ'তদের জানাজায় খা'টিয়া দেবে না, কেউ আসবে না, কবর খুঁ'ড়তে দেবে না, এ কোন কুসং'স্কার আর ভী'তিকর সমাজে বসবাস করছি আমরা। প্রতিবেশীর এমন ব্যবহারে মন ভে'ঙে গেছে আমাদের।

কেন খাটিয়া জো'টেনি এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি সরকারিভাবে গঠিত করোনায় ম'রদে'হ দা'ফন কমিটির শৈলকুপা শাখার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

শৈলকুপা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। গ্রামের মানুষের মাঝে এখনও ভ্রা'ন্ত ধা'রণা রয়েছে। করোনায় মৃ'ত্যুর তিন ঘণ্টা পর ম'রদে'হে জী'বা'ণু থাকে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জা'নাজা, দা'ফন-কা'ফন সবকিছুই করা যায়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে