ঝিনাইদহ: পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার ২৫ দিন পর ইসলামী ছাত্র শিবিরের দুই নেতার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। তারা হলেন- শিবিরের ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ পৌরসভা সভাপতি আবুজর গিফারি ও শিবির নেতা শামীম। নিহতদের শরীরের একাধিক স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টায় যশোর সদরের হৈবতপুর ইউনিয়নের জোড়াদহ গ্রামের একটি পুকুরে তাদের লাশ পাওয়া যায় বলে কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান। লাশ দুটি যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
ওসি ইলিয়াস বলেন, সকাল ৮টার দিকে পুকুরে দুটি লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। অন্য কোথাও তাদের গুলি করে হত্যার পর পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে ধারণা করছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
গত ১৮ মার্চ শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঝিনাইদহ জামতলা মোড় থেকে দু’টি মোটরসাইকেল যোগে ৪ জন ব্যক্তি পুলিশ পরিচয়ে যশোর এমএম কলেজের ছাত্র ও ছাত্রশিবির কালিগঞ্জ পৌরসভার সভাপতি আবুজর গিফারি ও ২৫ মার্চ ঝিনাইদহ কে সি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেনকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিল তাদের পরিবার ও ছাত্রশিবির।
এ নিয়ে শিবির ও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এবং বিবৃতির মাধ্যমে দুই নেতার সন্ধান দাবি করা হলেও বিষয়টি পুলিশ আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ করেছিল ছাত্রশিবিরের।
গণমাধ্যমে পাঠানো ছাত্রশিবির ও নিহত দুইজনের পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিক বিবৃতির মাধ্যমে দুই জনের জীবন নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। অবশেষে বুধবার যশোরে একটি পুকুর থেকে তাদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা সকালে মন্দিরে পূজা দিতে গিয়ে পুকুর পাড়ে লাশ দুটি দেখতে পায়। পরে তারা থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে।
এদিকে, লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে আবুজার গিফারি ও শামীম মাহমুদের পরিবারের লোকজন গিয়ে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন।
শামীম মাহমুদের বাবা রুহুল আমিন বলেন, গত ২৪ মার্চ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহর থেকে সাদা পোশাকের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শামীমকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। যাশোরে লাশ উদ্ধারে খবর পেয়ে বুধবার পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন।
অপরদিকে, আবুজর গিফারির বাবা নূর ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমার ভাই ও ভাতিজা ঘটনাস্থলে গেছে। তারা নিশ্চিত করেছে যশোরে উদ্ধার হওয়া লাশ আমার ছেলে আবুজর গিফারির। গত ১৮ মার্চ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
তারা নিখোঁজ হওয়ার পর উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছিল।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন জানান, লাশ দুটি অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা লাশ শনাক্ত করেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি শুনেছি দু’জনের লাশ পাওয়া গেছে। তবে ঘটনাস্থল যশোরের মধ্যে হওয়ায় আমরা বিস্তারিত জানতে পারিনি।’
১৩ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস