ঝিনাইদহ : 'আমার ৪ বছর বয়সের শিশুকন্যা যেন এতিম না হয়। সে ৪ দিন ধরে কিছু খায়নি। তার বাবা ফিরে না আসলে সে খাবার খাবে না। আপনারা আমার স্বামীকে ফেরত দিন।'
বুধবার বিকালে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে নিখোঁজ শিক্ষক মিনারুল ইসলামের স্ত্রী মেহেরুন নেছা মেরী তার স্বামীর সন্ধানের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই আকুতি জানান।
এসময় উপস্থিত মেরী, তার শিশু সন্তান নুসরাত ও স্বজনদের কান্নায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। তাদের কান্না দেখে উপস্থিত সংবাদকর্মীরাও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
লিখিত বক্তব্যে মেরী বলেন, গত ৩০ জুলাই ভোর রাতে ১৫/২০ জন ব্যক্তি পুলিশ পরিচয়ে জেলা শহরের খোন্দকার পাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে তার স্বামীকে নিয়ে যায়। সেই থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও স্বামীর খোঁজ পাননি।
সন্তান কোলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, পুলিশই তার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে। তার আশংকা বিনা কারণে তার স্বামীকে ক্রসফায়ার সাজিয়ে হত্যা করা হতে পারে।
তার দাবি, মিনারুল জামায়াত কিংবা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। স্বামীকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
মেরী জানান, নিখোঁজ মিনারুল জেলা শহরের আদর্শপাড়ার একটি কেজি স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পরিবার নিয়ে জেলা শহরেরই খোন্দকার পাড়ায় একটি ভাড়া করা বাড়িতে বসবাস করছিলেন তারা। মিনারুল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছে। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খামারাইল গ্রামে।
ছোট বেলায় সে (মিনারুল) এতিম খানায় পড়া লেখা করেছে এমন তথ্য দিয়ে স্ত্রী মেরী আরও বলেন, আমার সাড়ে ৪ বছরের বাচ্চা নুসরাত বাবার জন্য সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে। বাবা ফিরে না আসলে সে খাবার গ্রহণ করবে না জানিয়েছে।
মিনারুলের স্ত্রীর দাবি, এই ছোট্ট শিশুটিকে যেন এতিম করা না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে নিখোঁজ মিনারুল ইসলামের মা সুফিয়া খাতুন, ভাই রোকনুজ্জামানসহ অন্যান্য স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে মিনারুল নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, এই নামে কাউকে আটক করা হয়নি। -যুগান্তর
০৪ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস