খুলনা : ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেম থেকে বিয়ে, অত:পর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন খুলনা মহানগরীর ইকবালনগর এলাকার রাফিজা আক্তার টুম্পা (১৯)। যৌতুক না পেয়ে স্বামী ফরহাদ হোসেন মুরাদ তার ওপর অমানষিক নির্যাতন চালায়। টুম্পা এখন খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
বুধবার দুপুরে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে টুম্পা জানান, ২০১৬ সালের জুন-জুলাই মাসের দিকে গোপালাগঞ্জের গোপিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা মো. সাহেব আলী শেখের ছেলে শেখ ফরহাদ হোসেন মুরাদের সঙ্গে তার ফেসবুকের মাধ্যমে প্রথমে পরিচয় হয়। এরপর প্রেম। ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই স্বামী মুরাদ বিভিন্ন সময় ব্যবসার কথা বলে তার কাছে যৌতুক দাবি করে। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় শুরু হয় নির্যাতন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য তাদের বাসায় যায় মুরাদ। এ সময় তার বাবা-মা ঘরে ছিলেন না। রাত সাড়ে ১২টার দিকে যৌতুক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে মুরাদের কথাকাটাটি হয়। এর একপর্যায়ে মুরাদ বেল্ট খুলে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এরপর তাকে আরও মারধর করলে তার চিৎকারে আশেপাশ লোক এগিয়ে আসলে মুরাদ পালিয়ে যায়। পরে ওই দিন রাতে তাকে আহত অবস্থায় খুলনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
টুম্পা আরও জানান, তিনি মুরাদের হাত থেকে বাঁচতে চান। তার স্বামী প্রায় অস্ত্র দেখিয়ে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখায়।
এ ঘটনায় টুম্পার বাবা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে খুলনায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনে আইনে একটি মামলা করেছেন (নং-১৩, ১৩.০২.১৭)। মামলা হওয়ায় পর মুরাদ আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য শফিউল আলমকে মোবাইলে হুমকিও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ১৫ ফেব্রুয়ারি শফিউল আলম খুলনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন (নং-৭৩৯, ১৫/০২.১৭)।
শফিউল আলম জানান, তার জামাই প্রায়ই তার বাসায় মদ্যপান অবস্থায় প্রবেশ করতো। মেয়েকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাতো। এখন তাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বামীর নির্যাতনের শিকার টুম্পা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার স্বামী মুরাদের বাসা গোপালগঞ্জ থাকায় তাকে ধরতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করা হচ্ছে। শিগগিরই মুরাদকে আইনের আওতায় আনতে পারবো বলে আশা করছি।
১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম