এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : খুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের দাম কমেনি, বরং হু হু করে বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন, টমেটো, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, লাউসহ অন্যান্য সবজির দামও খুচরা বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির জন্য আড়তদারের বাড়তি চাপ ও বর্ষার কারণে সরবরাহ কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন, তবে ক্রেতারা বলছেন অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়িয়ে বাজারকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) খুলনার নতুন বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার ও গল্লামারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বিক্রেতারা দাবি করছেন, আড়তে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে।
পেঁয়াজ বিক্রেতা রহিম হাওলাদার বলেন, আড়তদাররা হঠাৎ করেই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। না কিনলে দোকান খালি পড়ে যাবে, তাই বাধ্য হয়েই বেশি দামে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে।
একই অবস্থা কাঁচা মরিচেরও। এক সপ্তাহ আগে কেজি প্রতি ১৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া মরিচ এখন বাজারে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বর্ষার কারণে সরবরাহ কমে যাওয়াকেই দায়ী করছেন বিক্রেতারা। কাঁচা মরিচ বিক্রেতা সামাদ শেখ জানান, টানা বৃষ্টিতে জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। ফলে সরবরাহ কমেছে। সরবরাহ কমলে আড়তে দাম বাড়ে, আমরা সেই দামে কিনে সামান্য লাভ রেখে বিক্রি করি।
শুধু পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ নয়, অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে। খুচরা বাজারে বেগুন কেজি প্রতি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা এবং পটোল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা সবজি বিক্রেতা আমির আলী বলেন, এক কেজি কাঁচা মরিচ আড়ত থেকে কিনতে হয় ২০০ টাকার ওপরে। তার সঙ্গে খরচ আর নষ্ট হওয়ার হিসাব করলে ২০-২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। বাজারে অনেক দোকান আরও বেশি দামে বিক্রি করছে।
তবে এসব ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন ক্রেতারা। নতুন বাজারের ক্রেতা গৃহিণী মমতা বেগম বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সব কিছুর দাম এত বেড়ে গেল কীভাবে? আড়ত আর খুচরা-সবারই মিলেমিশে সিন্ডিকেট চলছে। সাধারণ মানুষ বাজার করতে গিয়ে এখন হিমশিম খাচ্ছে।
গল্লামারি বাজারে কেনাকাটা করতে আসা চাকরিজীবী সেলিম হোসেনের বলেন, বেতন তো বাড়ে না, কিন্তু বাজারে গেলে প্রতিদিন নতুন ধাক্কা খেতে হয়। মরিচ-পেঁয়াজ ছাড়া রান্না হয় না। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।
মিস্ত্রিপাড়া বাজারের ক্রেতা শাহনাজ পারভীন বলেন, বিক্রেতারা বলে আড়তে দাম বেশি, আড়ত বলে সরবরাহ কম। শেষ পর্যন্ত চাপটা পড়ছে আমাদের ওপরই। প্রতিদিন বাজারে এসে দাম শুনলেই মাথা ঘুরে যায়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কার্যকর মনিটরিং না থাকায় আড়ৎ থেকে খুচরা পর্যন্ত দামে নৈরাজ্য চলছে। এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়ে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ ক্রেতাদের।