 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
কুষ্টিয়া থেকে : ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছে তারিক। মায়ের মমতা পুরোপুরি না পেলেও বাবাকে নিয়েই তারিকের পরিবার। হঠাৎ তার ওপর নেমে আসে কালো ছায়া। মাথার উপর একমাত্র ছাতা বাবাও আলসারে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। এ অবস্থায় পড়ালেখার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয় তারিক।
বর্তমানে ১৪ বছরের শিশুটি পড়ালেখা করছে ত্রিবেনী হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে। পাশাপাশি ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে পরিবারের। আরেক শ্রমজীবী শিশু জিহানের (৯) গল্প একটু ভিন্ন। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে পরিবারের হাল ধরেছে জিহান। আর্থিক অনটনের কারণে পড়ালেখা আর চালিয়ে যেতে পারেনি।
মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে আর জিহানের ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই কোনোরকম সংসার চলে তাদের। শিশু ভ্যানচালক কাজলের (১২) গল্পটাও প্রায় একইরকম। ছোটবেলায় বাবা হারিয়ে পরিবারের হাল ধরেছে সে। পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় মা ও ভাই-বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে ভ্যান নিয়ে পথে নামতে বাধ্য হয় সে।
চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে আর এগোতে পারেনি কাজল। সংসার চালাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভ্যান চালায় এরা। জিহান, কাজলের মতো এমন প্রায় ২০ জন শ্রমজীবী শিশুকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করেছে ইবি প্রেস ক্লাব।
বুধবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের 'মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব' ম্যুরালের সামনে এসব শিশুদের মাঝে টি-শার্ট বিতরণ করে প্রেস ক্লাবের সদস্যরা। এ সময় উপস্তিত ছিলেন প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সহকারী প্রক্টর সাজ্জাদুর রহমান। পরে টিএসসিসিতে অবস্থিত প্রেস কর্নারে তাদের 'শিশু শ্রমজীবী হয়ে ওঠার গল্প' অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি সরকার মাসুমের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন। সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুমি নোমানের সঞ্চালনায় এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম। এ আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, শ্রমজীবী শিশুদের নিয়ে প্রেস ক্লাবের এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আসলে পুরো বাংলাদেশের চিত্র একই। সরকারের পাশাপাশি আমরা সবাই যদি এগিয়ে আসি তাহলে এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।