বুধবার, ১০ মে, ২০১৭, ০৫:৪৯:৩৬

'আমার ছেলে এ প্লাস পাইছে, হামার টাকা পাইশা নাই বেটাক পড়াবার'

'আমার ছেলে এ প্লাস পাইছে, হামার টাকা পাইশা নাই বেটাক পড়াবার'

লালমনিরহাট: বাবা লুৎফর রহমান দিনমজুর। এক মাস আগে টাঙ্গাইল শহরে ধান কাটতে গেছেন। মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। দিনমজুর বাবার টাকায় চলে সংসার আর চার ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। জায়গা জমি কিছুই নেই। বাড়ির প্রতিবেশী জলিল মাস্টারের বাড়িতে কাজ করেন মা নয়ন তারা। ঝিয়ের কাজ করে নিয়ে আসা খাবার খেয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে ইউসুব নবী।

এবার হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ইউসুব নবী। এসএসএসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র জিপিএ-৫ অর্জনকারী এই অদম্য মেধাবী।

দারিদ্রতার কারণে পড়াশোনা করতে গিয়ে বার বার হতাশ হয়েছে হাতীবান্ধার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের লুৎফর রহমান ছেলে ইউসুব নবী। কলেজের ভর্তির টাকা যোগাতে পরীক্ষা শেষ করে ঢাকায় গিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করেছে সে। পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর শুনে বাড়িতে ছুটে আসেন।

এখন সে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তাতে বাঁধা শুধু দারিদ্রতা। তাই সমাজের বিত্তবানরা একটু সহযোগিতা পেলে তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।

ইউসুব নবী জানায়, আমার কষ্ট বিফলে যায়নি আমি অনেক কষ্ট করে পড়াশুনা করে এই সাফল্য আনতে পেরেছি। আমি যেন আমার সাফল্য ধরে রাখতে পারি তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।

তার মা নয়নতারা জানান, আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই। আমার ছেলে এ প্লাস পাইছে। হামার টাকা পাইশা নাই বেটাক পড়াবার। সবাই যদি সাহায্য করে তাইলে হামার ছেলেক পড়াবার পামো।

হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমজি মোস্তফা জানান, ইউসুব নবী বিদ্যালয় থেকে একা জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। সে দিনমজুর দরিদ্র ঘরের ছেলে। তার স্বপ্ন পূরণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে