আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: বহিরাগত বখাটেদের উৎপাতে অতিষ্ট লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দিন দিন বাড়ছে বহিরাগত বখাটেদের অত্যচার।
শনিবার দুপুরে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন কলেজের ছাত্রী ও বহিরাগত এক বখাটে। রহস্যজনক কারনে কোন দন্ডÍ ছাড়াই ওই বখাটেকে ছেড়ে দেয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে সাধারন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা , শনিবার দুপুরে বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীরা পাশের একটি নির্জন শ্রেনী কক্ষে কলেজের একাদশ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে আদিতমারী উপজেলার ভাদাই সজিব বাজার এলাকার হযরত আলীর ছেলে বখাটে মোরশেদুলকে (১৯) অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকতে দেখতে পান। খবর পেয়ে অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থা হাতে নাতে ধরে ফেলেন।
এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বখাটের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। শিক্ষার্থীদের সাথে দৃষ্ঠান্ত মুলক শাস্তির দাবি তুলেন অভিভাবকরাও। কিন্তু রহস্যজনক কারনে অধ্যক্ষ কোনরুপ বিচার না করেই বখাটে মোরশেদুলকে ছেড়ে দেন এবং অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করার দায়ে ওই ছাত্রীকে বহিস্কার করার ঘোষনা দেন। তবে তারা আর এমন কাজ করবে না মর্মে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক মিয়া দায়িত্ব নিয়ে ওই ছাত্রীকে জিম্মায় নিলে বহিস্কারাদেশ থেকে মুক্তি পায় ওই ছাত্রী।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান ফটক থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। ফলে বহিরাগত বখাটেরা খুব সহজেই কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উৎপাত করে চলে যায়। প্রায় প্রতিদিন এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেই চলেছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এ থেকে পরিত্রানের আবেদন করেও কোন সুফল মেলে নি বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি। এমন অপ্রীতিকর ঘটনার কারনে উদ্বিগ্ন সাধারন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ইতিপুর্বে ঘটে যাওয়া এরকম ঘটনার দৃষ্ঠান্ত মুলক বিচার হলে এমন ঘটনা ঘটত না বলেও মন্তব্য করেন তারা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রী উৎপাতকারী বখাটেরা অধ্যক্ষের দলীয় বা পরিচিতজন হওয়ায় কেউ তাদের বাঁধা দিতে সাহস করেন না। ইতিপুর্বে রাতে বনভোজনের নামেও কলেজের ভিতরে নর্তকী দিয়ে রাতভর ফুর্তি করেছেন ওই বখাটেরা। এ নিয়ে অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ হয় নি। কলেজের পরিবেশ ফিরে পেতে তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কলেজের একজন শিক্ষক জানান, কলেজের প্রধান ফটক নিয়ন্ত্রণ করে ক্যাম্পাসকে বখাটে মুক্ত করা জরুরী। বিগত দিনে যা হয়েছে তা লজ্বাজনক। আগামী দিনে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সেই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
ছাত্রীকে জিম্মা নেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফারুক মিয়া জানান, চরিত্র গঠনের কারখানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কাজ কখনই মেনে নেয়া যায় না। বখাটে যুবককে বিনা বিচারের ছেড়ে দিয়ে লাঞ্চিত ছাত্রীকে উল্টো বহিস্কারের হুমকী দেয়াটা অযৌক্তিক। তিনিও এর সুষ্ট বিচার দাবি করেন।
মহিষখোচা বহু মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম জানান, নির্জন কক্ষে বসে গল্প করার কারনে তাদেরকে শাসন গর্জন করে উভয়ের অভিভাবকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এর বাহিরে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হন নি।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস