নাটোর : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় কাচারিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. মোতালেব হোসেনকে নানা আয়োজন ও সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে রাজকীয় বিদায় দিয়েছে এলাকাবাসী।
টানা ৩৫ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালোবাসা পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেলেন তিনি। গুরুদাসপুরের ইতিহাসে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলে জানায় স্থানীয়রা।
আজ শুক্রবার পৌরসভার কাচারিপাড়া মহল্লায় সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিল এলাকাবাসী।
সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। আয়োজন করা হয় অন্তত এক হাজার মুসল্লির খাবার। দুপুরে জুমার নামাজের পর ৭২ বছর বয়সী ইমামকে হাত ধরে ঘোড়ার গাড়িতে তোলে এলাকাবাসী। ঘোড়ার গাড়িতে ওঠার আগে শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চান তিনি।
ঘোড়ার গাড়ির সামনে-পেছনে অন্তত দুই শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে পাঁচ কিলোমিটার অদূরে চলনালি গ্রামে ইমামের বাড়িতে তাকে নিয়ে যায় এলাকাবাসী।
জুমার নামাজের পর মসজিদের বিদায়ি ইমাম মোতালেব হোসেনের হাতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা তুলে দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. শামসুল হক শেখ।
এ সময় শত শত মুসল্লির উপস্থিতি ঘোড়ার গাড়িতে উঠানো হয় ইমামকে। সামনে-পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ইসলামের বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়।
বিদায়ি ইমাম মোতালেব হোসেন বলেন, ‘১৯৮৯ সাল থেকে এই মসজিদে ইমামতি করে আসছি। ৩৫ বছরের বিদায় বেলাতে এত ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি ‘ এমন আয়োজন প্রতিটি মসজিদে করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. আলমগীর শেখ জানান, গুরুদাসপুরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। এর আগে কখনো উপজেলায় এভাবে কোনো ইমামকে বিদায় দেওয়া হয়নি।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. বরকত আলী বলেন,‘ ইমাম সমাজের নেতা। নেতাকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দিতে পেরে আমরা স্বস্তি পেয়েছি।’