শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:১৮:৪৯

‘মানুষজন আসি হামার ঘর পুড়ি দেলে কেনে ?’

‘মানুষজন আসি হামার ঘর পুড়ি দেলে কেনে ?’

নিউজ ডেস্ক :   ‘কোন জায়গায় কী হলো, ফেসবুক নামের কোন জাগার কে কে লেখিল, হামরা এগুলোর কিছুই জানি না। হামার ঘর মানুষজন আসি কেনে পুড়ি দেলে?’ এ প্রশ্ন ঘরপোড়া অমুন্য রায়ের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের আটটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এতে দুটি ঘর পুড়েছে অমুন্য রায়ের।

ওই ঘটনায় ছয়টি ঘর পুড়েছে সুধীন রায়ের। তিনি জানালেন, তাঁর ছয়টি ঘরের সব আসবাব, গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছু পুড়ে গেছে। এখন কীভাবে ঘর তুলবেন, কীভাবে জীবন চালাবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না তিনি। এমন করে করুণ অভিব্যক্তি ব্যক্ত করলেন ঘর পুড়ে যাওয়া বিধান রায়, কৌশল্য রায়, কুলিন রায়, হিরণ রায় ও দীনেশ।

আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেল, মানুষের মধ্যে এখনো শঙ্কা কাটেনি। ঘরপোড়া শতাধিক মানুষ রাতভর জেগে ছিলেন। উৎকণ্ঠায় তাঁদের রাত কেটেছে। পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো ধ্বংসস্তূপের মতো পড়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অভিযোগ, রাতে পাশের গ্রামে কারও কারও বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল তারা।

গ্রামে সকাল পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউর রহমান ঘটনাস্থলে গেছেন। তিনি ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সবার সঙ্গে কথা বলছেন। ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য গ্রামবাসীকে অনুরোধ করছেন। ইউএনও জিয়াউর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ঘর নির্মাণের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ১০টি পরিবারকে তিন হাজার করে টাকা সাহায্য ও ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন, শুকনো খাবার দেওয়া হবে। ঘর তৈরির জন্য যা প্রয়োজন, তা দেওয়া হবে।

এ ঘটনায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত নয়জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মাহবুবুল (৩০) নামের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান চিকিৎসকেরা। গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী আজ সকালে বলেন, ওই ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো মামলা করা হয়নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে