শনিবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০১:১২:৪৯

রংপুরে সব ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তিতে আওয়ামী লীগ

রংপুরে সব ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তিতে আওয়ামী লীগ

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর থেকে : নির্বাচনী উত্তালের কারণে হেমন্তের শীত রংপুর নগরীর মানুষকে কাবু করতে পারছে না। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। পাড়ায়-মহল্লায় পথসভা করছেন। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হাটবাজার ও পাড়া-মহল্লার চা-দোকান উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের আলোচনায়।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (রসিক) মেয়র পদ দলীয় প্রতীকে হলেও কাউন্সিলর পদে সে বিধান নেই। এর পরও কাউন্সিলর পদে আওয়ামী, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মহানগর ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩৩টি ওয়ার্ডের অধিকাংশেই কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী নেই।

তবে সব ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় অস্বস্তিতে পড়েছে দলটি। তবে ৩৩টি ওয়ার্ডের ১৩টিতে বিএনপি এবং ১৮টিতে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী নেই। অনুসন্ধানে জানা যায়, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে  প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছ থেকে তিনজন করে কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম চেয়েছিল দলটির মহানগর কমিটি। অধিকাংশ ওয়ার্ড কমিটি তা আমলে নেয়নি।

রসিকের ৩৩ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২২১ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৯৯ জন নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মাঠ চষেও বেড়াচ্ছেন তারা। তবে একাধিক প্রার্থীই তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা ছয় প্রার্থীর মধ্যে চারজনই আওয়ামী লীগ নেতা। তাদের মধ্যে আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং ওয়ার্ড কমিটির বর্তমান ও সাবেক সভাপতি।

কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘আমার মাঠের অবস্থা ভালো। তবে দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় বিজয়ের পথে কিছুটা সমস্যা দেখছি।’ আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, ‘গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিনজন প্রার্থী ছিলেন। এর পরও আমি বিজয়ী হয়েছি। তবে একই দলের একাধিক প্রার্থী থাকলে নিশ্চিত বিজয়ও অনেক সময় বাধাগ্রস্ত হয়।’

২৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনই আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী। এদের একজন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘মহানগর কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। অন্য নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে সেটা মহানগর কমিটি দেখবে।’ একই অবস্থা সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদেও। ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬৫ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগেরই ২৯ জন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও দলের সমর্থন অবশ্যই প্রয়োজন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে আমরা ওয়ার্ড কমিটির কাছে তিনজন করে প্রার্থীর নাম চেয়েছিলাম। অনেকেই দেয়নি। ৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর মাঠের অবস্থা বুঝে একজন প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে। যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না, তাদের বিষয়ে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতে বিএনপির ২৫ জন এবং ১৫টিতে জাতীয় পার্টির ১৭ জন নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৩টিতে বিএনপির ও ১৮টিতে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী নেই। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিজু বলেন, অনেক নেতা-কর্মীর নামে পুলিশের নাশকতার মামলা থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গ্রেফতার আতঙ্কে তারা প্রার্থী হননি।

আর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে ভোট না হওয়ায় আমরা কাউন্সিলর নিয়ে ভাবছি না। আমাদের মূল টার্গেট মেয়র প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা।’ -বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে