বুধবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৯, ১১:৫৫:৫৯

অবশেষে রিকশাচালক স্কুলছাত্র কবিরের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন রংপুরের ডিসি

অবশেষে রিকশাচালক স্কুলছাত্র কবিরের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন রংপুরের ডিসি

রংপুর :  অবশেষে আশার আলো খুঁজে পেল হতদরিদ্র স্কুলছাত্র কবির। তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব।

রংপুরের বাবুপাড়া লিচুবাগান এলাকার রিকশাচালক স্কুলছাত্র কবির হোসেনের সন্ধান জানতে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। ওই কর্মকর্তা কবির হোসেন ও তার পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন। পরে জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব কবিরকে নিজ দফতরে ডেকে আনেন।

হতদরিদ্র জীবনযাপনের মধ্যেও তার লেখাপড়ার প্রতি অদম্য প্রচেষ্টার কথা শুনে তিনি তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। তার পরেই গত মঙ্গলবার তাকে রংপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এসএসসি ভেকেশনাল জেনারেল ইলেকট্রিকেল ওয়ার্কশপে ভর্তি করেন দেন।

বুধবার দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে তাকে বই-খাতা, স্কুল ড্রেস, জুতা ও ব্যাগ কিনে দেন। এ ছাড়াও তার পড়ালেখায় যেন কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য একটি রিকশাও উপহার দেন।

এ সময় রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ এনামুল কবিরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের সহধর্মিণী আফসানা বারীও তাকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।

জেলা প্রশাসক তাকে এভাবে ডেকে এনে নতুন জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখাবে তা কখনো ভাবেনি কবির। তাই জেলা প্রশাসকের এ সহযোগিতায় তার আনন্দ অশ্রু বাধা মানেনি। চোখের অশ্রু মুছে সে বলে, রিকশা চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের সংগ্রামে লেখাপড়াও চালিয়ে যাব।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর পর মা খোরেছা বেগমের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় সে। বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে হয় তাকেই। আর তাই একদিন রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে। রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। সংসারের হাল ধরলেও পড়ালেখা তো বন্ধ থাকতে পারে না। তাই এখন দিনে স্কুল আর রাতে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে কবির।

তার জীবন সমাজের আট-দশজনের মতো নয়। তবে চোখেমুখে বড় হওয়ার স্বপ্ন। নানি শ্রোতন নেছাসহ ভাইবোনদের নিয়েই তার সংসার। নগরীর কুঠির পাড়ার ইউসেফ স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে।

নানি শ্রোতন নেছা আরও জানান, কবির নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না। দিনে রিকশা চালানোর পাশাপাশি রাতে স্কুলে যায় কবির। তিনি বলেন, ব্যক্তি বা সরকারিভাবে আমার নাতি কবিরকে সহযোগিতা করা হলে কবির তার স্বপ্নপূরণ করতে পারবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে