শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:৩৪:১৯

দাম কমতে কমতে আলুর কেজি কত হলো জানেন? অবাক হবেন

দাম কমতে কমতে আলুর কেজি কত হলো জানেন? অবাক হবেন

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গত মৌসুমে রংপুরসহ বিভাগের আট জেলায় ব্যাপক আলুর চাষ হয়েছে। তবে দাম না থাকায় অনেক চাষি নিঃস্ব হয়েছিলেন। কেউ কেউ লাভের আশায় চলতি মৌসুমে হিমাগারে আলু মজুদ করেছিলেন। কিন্তু দাম না বাড়ায় মজুদ করা আলু বিক্রি হচ্ছে সেভাবে। ফলে চাষি-ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।

চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, রংপুর মহানগরসহ জেলার আট উপজেলায় এবং বিভাগের জেলাগুলোতে গত মৌসুমে আলুর ব্যাপক চাষ হয়েছিল। ফলনও বাম্পার হয়েছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বড় ধাক্কায়। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এবার হিমায়িত আলুতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার লোকসান হবে।

তাদের অভিযোগ, সরকারের নির্ধারিত ২২ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। ফলে চাষিরা এখন দিশেহারা। সংসার খরচ চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেকেই লোকসানে পড়েছেন। কেউ কেউ দেনায় পড়েছেন।

তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, আলুর বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন পরিকল্পিত চাষ ব্যবস্থা, রপ্তানি বাজারে নতুন পথ খোঁজা, দেশীয় আলুর চাহিদা বাড়াতে সরকারি উদ্যোগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে রংপুর মহানগরসহ কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এক লাখ ১৯ হাজার ৭৩৯ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ টন। বিক্রির পরও বিভাগের ১১৬টি হিমাগারে এখনও মজুদ আছে নয় লাখ ৩৬ হাজার ২৮৩ টন আলু। যার দাম প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার মতো।

চাষিরা জানান, প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে পড়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য খরচ যোগ হয়েছে আরও সাত টাকা করে। অথচ বর্তমানে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র নয় থেকে সাড়ে নয় টাকা কেজিতে। ফলে প্রতি কেজিতে লোকসান গড়ে ১৮ থেকে ২০ টাকা। দাম না বাড়লে তারা বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন।

রংপুর মহানগরের তামপাট এলাকার চাষি নুর ইসলাম ও ইছার আলী জানান, আলুর দাম এত কম যে সংসার চালানোই এখন কষ্টের। আমরা নিরুপায় হয়ে পড়েছি।

পীরগাছা উপজেলার চাষি জাহাঙ্গীর আলম ও ফুল মিয়া বলেন, সামনে আবার আলুর মৌসুম আসছে। এবার চাষের টাকাও হাতে নেই। সরকার গত ২৭ আগস্ট হিমাগার থেকে আলুর দাম কেজি প্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি।

এ বিষয়ে রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এন.এম. আলমগীর বাদশা জানান, যারা আলু বিক্রি করতে চান, তারা ক্রেতা পাচ্ছেন না। বিক্রি কম হওয়ায় নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

রংপুর কৃষাণ হিমাগারের ম্যানেজার মাজেদুল ইসলাম বলেন, সরকারি তেমন কোনো পদক্ষেপ না থাকায় আলু খালাস না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে কৃষকের পাশাপাশি হিমাগারগুলোরও ক্ষতি হবে।

শাহ আমানত হিমাগারের দায়িত্বশীল ওমর সানি জানান, দাম কিছু কম রয়েছে। এতে অনেক চাষি হিমাগারে মজুদ আলু নিতে আসছেন না।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে