মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৯, ০৫:২৪:০০

যে ৬ কারণে রংপুরের পল্লীনিবাসেই এরশাদকে দাফনের সিদ্ধান্ত

যে ৬ কারণে রংপুরের পল্লীনিবাসেই এরশাদকে দাফনের সিদ্ধান্ত

রংপুর থেকে : সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিজ এলাকা রংপুরেই দাফন করা হচ্ছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সদ্য প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। মঙ্গলবার দুপুরে পার্টির সিনিয়র নেতারা এরশাদকে সমাহিত করার বিষয়ে চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্ত নেন।

মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী। তিনি জানান, রংপুরের মানুষের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে রংপুরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন বেগম রওশন এরশাদ। পাশে তার জন্য কবরের জায়গা রাখার অনুরোধও করেন রওশন এরশাদ।

এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতির দাফন নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। সেই সময়ে তাকে বনানীর সামরিক কবরস্থানেই দাফন করার সিদ্ধান্তের কথা জানান পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সামরিক কবরস্থানে এরশাদের জন্য কবরও খনন করা হয়।

এরশাদের মৃত্যুর আগে সম্প্রতি প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক বৈঠকে তার দাফন নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হয়। সেখানে এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা হয়। সেই সময়ে রংপুরবাসী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবি জানান জানান।

অবশেষে যেসব কারণে রংপুরেই সাবেক এই রাষ্ট্রপতির সমাধি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

১. রংপুরের মানুষের আবেগ ও ভালোবাসায় শ্রদ্ধা রেখে পল্লী নিবাসেই সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

২. পল্লী নিবাসে এরশাদের সমাহিত করার অনুমতি দিয়েছেন তার স্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। এরশাদের কবরের পাশে নিজের জন্য কবরের জায়গা রাখার অনুরোধও করেছেন রওশন এরশাদ।

৩. জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ রংপুর-৩ (সদর) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি এ আসন থেকে টানা ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রংপুরকে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি বিবেচনা করা হয়। এরশাদ জেলে থেকেও এখান থেকে ভোট করে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন।এই এলাকায় এরশাদের সমাধি থাকলে আগামী দিনেও রংপুরবাসীর আবেগ জাতীয় পার্টির পক্ষে থাকবে।

৪. পল্লীবন্ধুকে রংপুরে দাফনের বিষয়ে একাট্টা ছিলেন রংপুরের নেতাকর্মীরা। তারা আজ জানাজার আগে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সেই দাবিতে স্লোগান দেন। পাশাপাশি প্ল্যাকার্ডও প্রদর্শন করেন।

৫. এরশাদকে রংপুরে দাফনের জন্য রংপুরের নেতাকর্মীরা গতকাল রাতেই কবর খুঁড়ে রাখেন। পল্লী নিবাসের লিচু তলায় এরশাদের বাবার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।রংপুরের মেয়রসহ সেখানকার নেতাকর্মীরা এরশাদের লাশ রংপুরের বাইরে নেয়া ঠেকানোর ঘোষণা দেন। জানাজাপূর্ব বক্তৃতায়ও সেখানকার নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এই দাবি জানান।

৬. এরশাদকে ঢাকায় সমাহিত করতে না দেয়ার পক্ষে রংপুরবাসীর যুক্তি ছিল- পল্লীবন্ধু জীবদ্দশায় স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে দেয়া হয়নি। মৃত্যুর পরও তাকে ঘিরে রাজনীতি করা হচ্ছে। তাকে আবদ্ধ জায়গায় কবর দিয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা চলছে। তাদের এসব অভিযোগ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে শেষ পর্যন্ত যৌক্তিক মনে হয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে