এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে উপজেলার কুশিয়া ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলী নামক স্থানে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন— ওই ইউনিয়নের ঘনিরামপুর মেডিকেল এলাকার রুপলাল দাস (৪১) ও রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। সম্পর্কে তারা জামাই ও চাচা শ্বশুর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রুপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুরের লালচাদ দাসের সঙ্গে। রোববার হবু কনেকে আশীর্বাদ করার জন্য জামাইয়ের পক্ষের লোকজন আসার কথা ছিল। এ জন্য শনিবার সন্ধ্যায় ভাস্তি জামাই প্রদীপের ভ্যানে করে বুড়িরহাট বাজারে যান রুপলাল। বাজার শেষে ফের প্রদীপের ভ্যানে করে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।
ভ্যানটি বুড়িরহাট বাজার এলাকার বটতলি নামক স্থানে পৌঁছালে স্থানীয় কয়েকজন তাদের চোর সন্দেহে আটক করে। মুহূর্তেই সেখানে আরও কিছু লোক জড়ো হন। ভ্যানে থাকার রুপলাল দাসের ব্যাগে কয়েকটি প্লাস্টিকের বোতলে তরল কিছু দেখেন স্থানীয়রা। ওই সময় আরেক ভ্যান চালক মেহেদী হাসান বোতলের তরলের ঘ্রাণ নেন। এরপর তিনি বমি করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে জ্ঞান হারান।
এর জেরে জামাই ও শ্বশুরকে ভ্যান চোর সন্দেহে মারধর করতে করতে বুড়িরহাট বাজারে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। দুজনেই ভ্যান চোর এমন কথা বলায় বাজারের জনসাধারণ উত্তেজিত হয়ে দুজনকেই গণপিটুনি দিতে থাকেন। এতে দুজেই গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় তারাগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাচাই-বাছাই শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুপলালকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় গুরুতর আহত প্রদীপকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক বলেন, চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে শনিবার রাতেই রুপলালের মৃত্যু হয়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে প্রদীপ মারা যান। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। দুটি লাশই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।