রংপুর : রংপুরের তারাগঞ্জে ১২ যাত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী দুই বাসের একটির চালক। তিনি ঘুমের ঘোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন এক যাত্রী।
সাইমন পরিবহন নামের ওই বাসটি আগেও কয়েকবার একটুর জন্য দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায় বলে দাবি করেন ওই যাত্রী।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ইকরচালিতে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে সাইমন পরিবহন ও তৃপ্তি পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১২ জন নিহত এবং অন্তত ৫৪ জন আহত হন।
সায়মন পরিবহনের যাত্রী ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া এলাকার কবিরুল ইসলাম দুর্ঘটনায় সামান্য আহত হন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ঠাকুরগাঁওয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকার সায়েদাবাদে সায়মুনে পরিবহনে উঠে চালকের পাশে ইঞ্জিনের ওপর বসি।
কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই চালক ঘুমে টলছেন। যাত্রীরা তাকে গাড়ি থামিয়ে চোখে পানি দিতে বলেন।
ঢাকা থেকে রংপুর আসার পথে গাজীপুর, বগুড়া ও রংপুর শহরে গাড়ি থামিয়ে তিনবার চোখে পানি দেন চালক বলে জানান কবিরুল। চালক গাড়িটি দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, তারাগঞ্জের ইকরচালি বাজার অতিক্রম করার পর বিপরীত দিক থেকে আসা তৃপ্তি পরিবহনের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে তার গাড়িটির। এতে বিকট শব্দে দুটি বাসই দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
কবিরুল ইসলাম বলেন, আমি তখন বাইরে ছিটকে পড়ে যাই। এরপর আর কিছু মনে নেই। পরে দেখতে পাই, আমি তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুইয়ে আছি। আমার হাত ও পায়ের চামড়া ছিলে গেছে।
কয়েকজন যাত্রীর বরাত দিয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মহিতুল ইসলাম বলেন, সায়মনের চালক ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। এ অবস্থায় দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণেই গাড়িটি তৃপ্তি পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
তৃপ্তি পরিবহনের চালক আহত হলেও সায়মনের চালক আহত হয়েছেন কি না তা জানা যায়নি বলে জানান তিনি। গাড়ি দুটির ছাদ যাত্রীভর্তি ছিল।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আটজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- সায়মন পরিবহনের চালকের সহকারী আকুল মিয়া (২৬), তৃপ্তি পরিবহনের চালকের সহকারী চন্দন রায় (২৫), নীলফামারীর সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের পাশারীপাড়া গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে কৃষি শ্রমিক মোহাম্মদ আলী কালা মিয়া (৪৫), সাবেদ আলীর ছেলে কৃষি শ্রমিক আব্দুল মতিন (৪০), লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার মধ্যগুড্ডিমারী গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক একাব্বর আলী (৬৫), নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার লিটন মিয়া (২২), ডোমার উপজেলার মিজানুর রহমান (৪০) এবং তারাগঞ্জের ইকরচারী ফারুকিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক জিন্নাত রেহেনা (৩৫)।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক আ স ম বরকতুল্লাহ বলেন, চিকিসাধীন ৫৪ জনের মধ্যে ২১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
২০ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম