জাভেদ ইকবাল: দিন-রাত যেন সমান। ঈদকে ঘিরে রংপুরে বেচাকেনা জমে উঠেছে। কাপড়ের দোকান, জুতা-সেন্ডেলের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। ক্রেতাদের উপস্থিতি ও নজর কাড়তে জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, গোল্ডেন টাওয়ার, জেলা পরিষদ বিপনী বিতান, রজনাগন্ধা মার্কেট, শাহ্ আমানত মার্কেট, জাহাজ কোম্পানী শপিং কমপ্লেক্স, সিটি প্লাজা, মতিপ্লাজা, সালেক মার্কেট, জামাল মার্কেট, স্টেশন মার্কেট, হনুমান তলা মার্কেট, হাড়িপট্টি, বেতপট্টি, ধাপ, সিও বাজার, টার্মিনাল, সিটি করপোরেশন, সেন্ট্রাল রোড, জিএল রায় রোডসহ ছোট-বড় শপিং মল ও বিপনী বিতানগুলোতে ব্যাপক আলোক সজ্জা করা হয়েছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয়েছে বিশেষ মূল্য ছাড় ও র্যাফেল ড্র।
দেশি-বিদেশি রঙ্গিন পোশাকের বাহারে ভরে উঠেছে রংপুর। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষজন তাদের পছন্দের পোশাক কিনতে এখন ছুটছে দোকানগুলোতে। রংপুর বিভাগীয় জেলা শহরে ৮ উপজেলার ক্রেতাদের ভিড়ে নগরে যানজট অসহনীয় পর্যায়ে ঠেকেছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা। নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা। আশপাশ এলাকায় প্রায় ১০ হাজার পোশাক, কাপড়, জুতা, কসমেটিক্স, টেইলাস, ক্রোকারিজ, ইলেক্ট্রনিক্স, জুয়েলারি, ফার্নিচার, গালামাল প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত কেনাবেচায়। প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ মানুষজন কোটি কোটি টাকার পণ্য ক্রয় করছে। জাহাজ কোম্পানী শপিং কমপ্লেক্সের শেখ শখ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শাহিন আলম বলেন, পুরুষদের পছন্দের পোশাকের তালিকায় রয়েছে পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট। প্রকারভেদে এসব পণ্যের মূল্য সর্বনিম্ন ৬শ’ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের পোশাক ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, এবারে মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় থ্রিপিস, পাকিস্তানি জরজেটসহ চায়না চিকেন কাপড়। মেয়েদের পোশাকের মধ্যে বাজিরাও মাস্তানি, কিরনমালা, মাস্তি, আশিকী পোশাকের বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব পোশাক প্রকারভেদে ৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। জুতা সেন্ডেল ব্যবসায়ী জাবেদ আহমেদ বলেন, বড়দের চেয়ে এবার শিশুদের চায়নার জুতা-সেন্ডেল বিক্রি হচ্ছে বেশি। প্রকার ভেদে এসব জুতা সেন্ডেল ৮শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। মায়া শাড়িঘর প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা বলেন, সুতি, টাঙ্গাইল, জামদানি, সিল্ক শাড়ির চাহিদা রয়েছে গৃহিণীদের মধ্যে। প্রকারভেদে ৮শ’ থেকে শুরু করে ২০-২২ হাজার টাকা পর্যন্ত শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। জাহাজ কোম্পানী রঙ্গন প্রতিষ্ঠানে কিনতে আসা সানজিদা বলেন, প্রতি বছরের তুলনায় থ্রিপিস ও শিশুদের পোশাকের দাম অনেক বেশি। গত বছর ঈদের সময় যে প্যান্ট শিশু পোশাকের দাম ছিল ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। তা এবার দ্বিগুণের বেশি।
সুপার মার্কেটে আসা গৃহিণী সেলিনা ডলি বলেন, তার বাচ্চার জন্য ঝিলিক, কলাবেরি ও জিন্স প্যান্ট কিনতে এসেছেন। হামিদা শাড়ি ঘরের স্বত্বাধিকারী শহিদুল বলেন, বাজার জমে উঠেছে তবে বেতন ও ঈদ বোনাস পেলে বেচাকেনা আরো বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। ওরিয়েন্ট টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী আলহাজ বশির বলেন, ইতিমধ্যে টেইলার্সের মালিকরা কাপড় অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের শ্রমিকরা দিনরাত জেগে ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে কাজ কর্ম করে সময় পার করছে।-এমজমিন
২৫ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ