রংপুর : ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি অভিযানে লাশ হলো রায়হান। অবশ্য তার মায়ের দাবি- কখনোই নিখোঁজ ছিল না রায়হান। তার লাশ গ্রহণের ইচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন রায়হানের মা রাহেলা বেগম।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইল পাড়া গ্রামে রায়হানের বাড়ি। তার চাচা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রউফ এ তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
রায়হানের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইল পাড়া গ্রামে বলে পুলিশ নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে বলে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ৩ মাস আগেও রায়হান তার অসুস্থ মাকে দেখতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন। তবে রায়হান সরাসরি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বিষয়টি পরিবারের কেউ জানতো না।
নিহত রায়হানের লাশ তার মা রাহেলা বেগম গ্রহণ করে তাদের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
রায়হানের বাবার নাম শাহাজাহান কবীর। রায়হানরা চার ভাই-বোন। বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইলে একটি টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি করেন। দুই বোন শিউলী বেগম ও শাহানাজ বেগম দুজনই বিবাহিত।
রায়হানের স্বজনরা জানান, রায়হান স্থানীয় দামুর চাকলা দাখিল মাদ্রাসা ও পবিত্র ঝাড় মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছে। সে সব সময় তার বাবা মাসহ স্বজনদের নামাজ পড়ার জন্য বলতো। মাঝে মাঝেই আবার সে বাইরে যাওয়ার কথা বলে ৪-৫ দিন উধাও হয়ে যেত। আবার বাসায় চলে আসতো।
ঢাকার কল্যাণপুরে পুলিশি অভিযানে রায়হান নিহত হওয়ার পর টেলিভিশনে ছবি দেখে তার স্বজনরা রায়হানকে শনাক্ত করেন। এরপর থেকে তার বাবা শাহাজাহান কবীর গা-ঢাকা দিয়েছেন।
রায়হানের মা রাহেলা বেগম জানান, তার ছেলে জঙ্গি হয়েছে এটা তারা জানতেন না। প্রায়ই সে ফোন করতো। তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলতো ঢাকায় একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে চাকরি করছি।
রায়হানের চাচা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আব্দুর রউফ জানান, তার মা বলেছে শেষবারের মতো তার সন্তানের লাশ দেখতে চান। তাকে বাড়ির কাছেই পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করার কথাও বলেছেন তিনি।
তিনি জানান, গত বছর রমজানে বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল রায়হান। এরপর থেকে তাকে তিনি আর দেখেননি।
এলাকাবাসী জানান, রায়হানের চাচাতো ভাই মেহেদী হাসান জেএমবির নেতা ছিলেন বলে তারা শুনেছেন। তবে ৬ বছর ধরে তার কোনো সন্ধান কেউ জানে না। ওই মসজিদের ইমাম বেলালের সঙ্গে রায়হানের সম্পৃক্ততা ছিল। রায়হান ছাত্রশিবির করতো বলে তারা জানেন, কিন্তু জঙ্গি ছিল কি-না তা তারা জানেন না।
২৮ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম