সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এসএসসি’র প্রবেশপত্র না পাওয়ায় এক পরীক্ষার্থী অভিমানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। ওই পরীক্ষার্থীর নাম আমেনা আক্তার কেয়া।
বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যা করে সে।
কেয়া কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও একই উপজেলার দিগাং গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে।
নিহতের বাবা ইব্রাহীম হোসেন গাজী জানান, আমার মেয়েকে চলতি এসএসসি পরীক্ষার জন্য ফরম ফিলাপ বাবদ ২৬০০ টাকা দিয়েছিলাম। মেয়ে আমেনা আক্তার কেয়া ফরম পূরণ করে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত কোচিং ক্লাসও করেছে। পরীক্ষার আগে গত ২৬ জানুয়ারি কেয়া তার ছোট বোনকে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়ী অনুষ্ঠানেও অংশ নেয়। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর কয়েকদিন আগে সব ছাত্রীকে প্রবেশপত্র দেওয়া হলেও সে প্রবেশপত্র পায়নি।
ইব্রাহীম গাজী আরও বলেন, বিষয়টি জানতে গত বুধবার সকালে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তিনি স্কুলে যোগাযোগ করেন। এসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান বিপ্লব তাদের জানান, একটু সমস্যার কারণে তার প্রবেশপত্র বোর্ড থেকে আসেনি। তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই তাকে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে।
কেয়ার বাবা আরও বলেন, ‘কিন্তু, পরে আমার মেয়ে তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে জানতে পারে ফরম পূরণের সময় ভুলক্রমে স্কুল থেকে কেয়ার নাম বাদ পড়ে যায়। ফলে বোর্ড থেকে তার প্রবেশপত্র আসেনি। এ কথা শুনে আমার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পরীক্ষা শুরু হলে আমার মেয়ে অভিমানে বাড়িতে বিষপান করে।’
কেয়ার প্রতিবেশীরা জানান, বিষ পানের ব্যাপারটি টের পেয়ে প্রতিবেশীরা তাকে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় কেয়া।
কেয়ার বাবা ইব্রাহীম গাজী এ ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিচার দাবি করেছেন।
এদিকে, কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান বিপ্লব জানান, কেয়া টেস্ট পরীক্ষায় ছয় বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। ফলে তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি।
টেস্টে ফেল করার বিষয়টি কেয়ার বাবাকে জানানো হয়েছিলো কিনা এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে তিনি আরও বলেন, ফরম পূরণের জন্য কেয়ার কাছ থেকে কোনও টাকা গ্রহণ করা হয়নি।
সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। শিক্ষার্থী কেয়ার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম