সাতক্ষীরা থেকে: টানাটানির সংসার। নূন আনতে পান্তা ফুরায় এমনই অবস্থা। পরিবারের অন্ন জোটাতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা-মা। সেখানে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ দেয়া মানে তাদের পরিবারের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য।
তবে, এতো অভাব ও শত কষ্টের মধ্যে থেকেও দমে যাননি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মেয়ে আসমা আক্তার মিতা। বাউল শিল্পী মোতার হোসেনের কন্যা মিতা এখন ম্যাজিষ্ট্রেট। ৪০ তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন আসমা। শত অভাব ও কষ্টকে পেছনে ফেলে আসমা এখন ম্যাজিস্ট্রেট।
অভাবী বাউল শিল্পী বাবা মোতাহার হোসেন লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে না পারলেও থেমে যাননি মিতা। টিউশুনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছেন। এখন সেই গরীব পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার। এখন তাকে দেখতে ও অভিন্দন জানাতে আসছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
আসমা আক্তার মিতা ২০১০ সালে কেকেইপি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। কলারোয়া কাজীর হাট কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত হয়ে ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃবিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৩.৫৯ পেয়ে অনার্স ও একই বিষয়ে জিপিএ ৩.৬০ পেয়ে মাস্টার্স উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে ৪০ তম বিসিএস প্রশাসন বিভাগে মেধাক্রমে ৬০ পেয়ে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন।
আসমা আক্তার মিতা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের কিসমত ইলিশপুর গ্রামের বাউলশিল্পী মোতাহার হোসেন মন্ডলের মেয়ে। তিন মেয়ে ও এক ছেলে তার। বড় ছেলে ফয়সাল হোসেন রিকো একজন মটরশ্রমিক (বাসের স্টাটার)।
বড় মেয়ে রেশমা আক্তার লতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন। মেঝো মেয়ে আসমা আক্তার মিতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে এখন সুপারিশপ্রাপ্ত। ছোট মেয়ে শামীমা আক্তার নিপা দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন।