সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের পৌর এলাকার ইসলামিয়া সরকারী কলেজ ও মাল্টিলেটারেল স্কুলের মাঠ দখল করে চলছে মাছের চাষ। আর এ কারণে ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় শিশু-কিশোররা সুস্থ বিনোদন ও খেলাধুলার সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে। গত ৫ বছর ধরে এ অবস্থা চলে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এ নিয়ে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগের কোষাধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন জানান, পাঁচ বছর আগেও মাঠটি খেলার উপযোগী ছিলো। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ী হিলটন খন্দকার মাঠের পাশে অবস্থিত স্কুলের একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন। তিনি মাছ চাষের পরিধি বাড়ানোর জন্য মাঠের এক পাশে পাম্প মেশিন বসিয়ে পুকুরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পানি উত্তোলন করে কলেজের এ মাঠটিতে পানি প্রবেশ করাচ্ছেন।
এছাড়া, পুকুরের চারপাশের ড্রেনের মধ্যে বালির বস্তা ফেলে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ওই মাছ ব্যবসায়ী ড্রেনের কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে ওই মাঠে পানি ঢোকার ব্যবস্থা করেন। এতে করে সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠটি পুকুরে পরিণত হয়। এ সুযোগে মাছ ব্যবসায়ী হিলটন কলেজ মাঠটি পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ইসমাইল সিরাজী জানায়, বছরের অধিকাংশ সময় কলেজ মাঠ পানিতে নিমজ্জিত থাকায় আমাদের খেলাধুলা ও শরীর চর্চায় বিঘ্ন ঘটছে। এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষও উদাসীন। কলেজ কর্তৃপক্ষের নিকট এসব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দাবি জানায় সে।
ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত কোচ একরামুল হক মামুন বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ী হিলটন খন্দকার মাঠটি কৌশলে দখল করে মাছ চাষ করছেন। ঐতিহ্যবাহী এ কলেজ মাঠে আমরা নিয়মিত খেলাধুলা করেছি। এখন মাছ চাষের কারণে তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
মাঠটি মুক্ত করতে জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়রসহ নানা জায়গায় ধর্ণা দিয়েও কোনও ফলপ্রসু সমাধান পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
মাঠ দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে মাছ ব্যবসায়ী হিলটন জানান মাল্টিলেটারেল স্কুলের পুকুরটি ৩০ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে চাষ করে আসছি। কিন্তু লোকসান হওয়ায় কলেজ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ওই খেলার মাঠসহ মাছ চাষ করছি।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা বলেন, মাঠটি সংস্কারের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। এটি স্কুল ও কলেজের মাঠ, আমার পক্ষে এটি সংস্কারে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে, ড্রেন ভেঙ্গে মাঠে পানি ঢুকানোর বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাল্টিলেটারেল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তবে, ইসলামিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ড. এসআইএমএ রাজ্জাক মাঠ লিজ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি-বাদলের কারণে অল্প কিছু দিনের জন্য মাঠে পানি জমা হয়। মাঠটি সংস্কারের জন্য একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলেও কোনো বরাদ্দ মেলেনি। বরাদ্দ পেলে মাঠ সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি। -যুগান্তর।
৮ নভেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর