সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় পরকীয়ার অভিযোগে আবদুল মজিদ (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে ১০১টি জুতাপেটা এবং জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে সলঙ্গা থানার নলকা ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের প্রভাবশালী মাতবররা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাষ্ট্রবিরোধী এ ধরনের রায় ঘোষণা এবং বাস্তবায়নকারী মাতবরদের শাস্তিরও দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এদিকে, ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি লোকলজ্জায় গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার সকালে সুজাপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আবদুল মজিদের সঙ্গে একই গ্রামের আবু হানিফের স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্ক আছে বলে একটি মহল অপপ্রচার চালায়।
এর সূত্র ধরে, গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় আবু হানিফের বাড়িতে গ্রাম্য মাতবর শামছুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক সালিশ বৈঠক বসে। এতে জিল্লুর রহমান (সাবেক ইউপি সদস্য), আবদুল কাদের ও শাহাদত হোসেনসহ অন্যান্য মাতবরও উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৈঠকে মজিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও মাতবররা পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে তাকে ১০১টি জুতাপেটা এবং জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানোর রায় দেন।
মাতবরদের নির্দেশে মজিদের বড় ভাই আবদুল মান্নান জনসমক্ষে তাকে ১০১টি জুতাপেটা করেন। এরপর মজিদকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়।
সাবেক ইউপি সদস্য এবং ওই সালিশে উপস্থিত মাতবর জিল্লুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে নলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, 'বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। তবে এ ধরনের রায় দেয়া বা তা বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার কারো নেই।'
সলঙ্গা থানার ওসি আবদুর রফিক জানান, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
রায়গঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল আখতার জানান, হাইকোর্ট এ ধরনের রায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যদি কেউ হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। যায়যায়দিন
১৫ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি