শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:৫১:৩১

সিরাজগঞ্জে পাউবোর রিং বাঁধে ধস, লোকালয়ে পানি

সিরাজগঞ্জে পাউবোর রিং বাঁধে ধস, লোকালয়ে পানি

সিরাজগঞ্জ থেকে : নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার বাহুকায় পাউবোর বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ রিং বাঁধে আকস্মিক ধস দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পানির তোড়ে বাহুকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে বিকল্প বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। উজানের পানি বাড়ায় এমনিতেই যমুনার পানি এখন বিপদ সীমার ৭৩ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙা বাঁধ ঠিক করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও কাজ করছে।  

বাঁধ ভেঙে বাহুকা,চিলগাছা,ইটালী,ভেওয়ামারা ও গজারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বাহুকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার হাজারও মানুষ স্বেচ্ছা শ্রমে বাঁধ রক্ষার কাজ করছেন। পানি জেলা শহরে ঢুকতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

বাঁধ ভাঙার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে এলাকার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেছেন, ‘বাঁধের ভাঙা অংশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছি।’

বাঁধ ভাঙার জন্য পাউবোর উদাশীনতা,গাফিলতি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। এজন্য দোষীদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে কাছে দাবি জানিয়েছে।

বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিরাজগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবোর বগুড়া অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবু চন্দ্র শীল রাত ১০টার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,সদর উপজেলার পার্শ্ববর্তী কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের টুটুলের মোড় এলাকায় গত বছরের শুষ্ক মৌসুম থেকেই থেমে থেমে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। এরই মধ্যে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৩০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পাউবো মে মাসের শুরুতে বিকল্প নদী রক্ষা বাঁধের প্রায় ২ কি.মি রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শামিম কনস্ট্রাকশনসহ বেশ ক’জন ঠিকাদার ওই কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব গ্রহণ করে। কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গড়িমশি এবং পাউবোর লোকজনের বিরুদ্ধে উদাশীনতার অভিযোগ ওঠে। গত এক সপ্তাহ আগে রিং বাঁধের অদূরে ফের ভাঙন দেখা দেয়। এরপর স্থানীয় লোকজন ও গণমাধ্যম কর্মীরা পাউবোর লোকজনকে বারবার সতর্ক করার চেষ্টা করলেও তারা মোটেই সতর্ক হননি।

রিং বাঁধের ঠিকাদারি কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মের্সাস শামিম কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড জয়েন ভেনচার (জেভি) এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সেলিম আহম্মেদের মোবাইলেও বারবার ফোন করার পর তিনি রিসিভ করেননি। তার পার্টনার সেফাত আহম্মেদ বলেন, ‘ভাই বাঁধ ভেঙে গেছে,পরে কথা বলি।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমামের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। বাঁধ ভাঙার পর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। দু-একজনের নম্বর খোলা থাকলেও তারা ফোন রিসিভ করছেন না।
এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে