সিরাজগঞ্জ থেকে : নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সুমি খাতুনের বিয়ে হয়। হঠাৎ করেই তাঁর স্বামী মারা যান। পরে দেবরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দ্বিতীয় সংসার তাঁর টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখাপড়া শুরু করেন।
সব বাধা পেরিয়ে তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। সুমি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া এলাকার আবদুল্লাহ সরকার ও আম্বিয়া বেগমের বড় মেয়ে।
সুমির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমি ছাড়াও আবদুল্লাহর আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবদুল্লাহর উপার্জনে কোনোমতে তাঁদের সংসার চলে। ধানগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাস করে সুমি ভর্তি হন উপজেলা সদর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও সাধারণ বিভাগে বৃত্তি পান তিনি। নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন ধানগড়া মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে।
এ সময় বিদেশফেরত একজনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। কিছুদিন পর স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে দুই পরিবারেরসম্মতিতে তাঁর দেবরের সঙ্গে বিয়ে হয়। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই তাঁর ওই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর শুরু হয় তাঁর সংগ্রামী জীবন।
পুনরায় তিনি লেখাপড়া শুরু করেন।তিনি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ দশমিক ৫৬ পান। উচ্চমাধ্যমিকে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন উপজেলা সদরের ধানগড়া মহিলা কলেজে। এ বছর কলেজটি থেকে ১১২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে মানবিক বিভাগ থেকে তিনিই একমাত্র জিপিএ-৫ পান।
সুমির কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, সুমি প্রতিকূলতা পেরিয়ে যে ফল করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সুমির মা আম্বিয়া বলেন, সুমির বাবা মেয়ের পড়ালেখার জন্য সবকিছু করতে রাজি।
সুমি পেছনের সবকিছু ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বাল্যবিবাহের কারণে তাঁর জীবনে যে ছন্দপতন হয়েছিল, তা যেন আর কারও জীবনে না হয়। পড়ালেখা শেষ করে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে