শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:৫৭:০৮

‘বন্যায় আমরা হাবু-ডুবু খাইতাছি, আমাগোরে দ্যাহুনের কেউ নাই’

 ‘বন্যায় আমরা হাবু-ডুবু খাইতাছি, আমাগোরে দ্যাহুনের কেউ নাই’

সিরাজগঞ্জ: ‘বন্যায় আমরা হাবু-ডুবু খাইতাছি। আমাগোরে দ্যাহুনের কেউ নাই। নির্বাচনের সময় হ্যাগোরে কারো কাছে আমাগোরে আর জায়ুন লাগেনাই। মোটা-মোটা, বড়-বড় গাড়ি থিয়া আমাগোরে কাছে আইসে ভোটের নিগা। কইছে আপনেগোরে রাস্তা-ঘাটসহ যেকোনো সমস্যায় আমি পাশে থাকমু। হ্যাগোরে কথামতো ভোট দিয়া এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়নের মেম্বার-চেয়ারম্যান ব্যাহেকেই বানাইছি।

কিন্তু এহন আমরা বন্যায় হাবু-ডুবু খাইতাছি কেউ আমারোগে আর খোঁজখবর নিবার নিগা আইসে না। কিছু না দিলো একটু চোখের দ্যাহা দেখবার নিগা আইলেও মন ভইরা যাইতো। আজ ৭ দিন ধইরা বাড়িঘরে পানি উইঠা খুব কষ্টে দিন কাটাইতাছি-’ বলে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের প্রতি তার বুক ভরা ক্ষোভের কথা জানালেন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলাধীন এনায়েতপুর থানার বন্যায় আক্রান্ত বেতিল চরের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহানো তাঁত শ্রমিক ছানোয়ার হোসেন, তার স্ত্রী ডলি খাতুন, আশরাফ আলী, তার স্ত্রী আসমা খাতুন, বৃদ্ধ আছিয়ন বেওয়া।

তারা জানান, বাড়িতে ১ সপ্তাহ ধরে পানি উঠে পড়ায় গরুর গোয়াল ঘর, টিউবয়েল এবং নিজেদের থাকার ঘরেও ৩ ফুট করে পানি উঠে পড়েছে। কচুরিপানা দিয়ে ভেলা করে গরু রাখছি। কাজ না থাকায় দুই বেলা খাবার জুটছে না। কেউ দেখতে আসেনি। এমনি ক্ষোভের কথা জানালেন বেতিল চরের আলম উদ্দিন, রমজান আলী, রাজ্জাক মোল্লা, সুলতান আলী।

যমুনা নদীর ভাঙনে সর্বস্বান্ত হওয়া কয়েক হাজার মানুষ বেতিলসহ আশপাশের মাজগ্রাম, বিনদহ, আসাননগর, ধুলিয়াবাড়ি, বেতিল চর, চাঁদপুর চরাঞ্চলজুড়ে গত ৪-৫ বছর আগে আশ্রয় গড়েছিল। কিন্তু হঠাৎ এই বন্যায় অব্যাহত ভাবে পানি বৃদ্ধিতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এজন্য এখন এ গ্রামগুলোর ৫ শতাধিক ঘরবাড়িতে বিরাজ করছে বন্যার ১ থেকে ৩ ফুট পানি। কোনো কোনোটিতে তার চেয়েও বেশি। রান্নাঘরসহ গৃহপালিত পশু রাখার গোয়াল ঘরগুলোও তলিয়ে গেছে। টিউবয়েল তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব।

যে কারণে নানা দুর্ভোগে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা। এজন্য শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র। আর বাড়িতে থাকলেও তারা নানা কষ্টে দিন পার করছেন। গ্রামগুলোতে থাকা ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও একই অবস্থা বিরাজ করায় কার্যত তা বন্ধ হয়ে গেছে।

এমতাবস্থায় এ গ্রামগুলো এবারের বন্যায় উপজেলার অন্যতম দুর্ভোগ পোহানো গ্রাম। তবে এখনো কোনো সরকারি ভাবে সাহায্য এখানে পৌঁছেনি।-এমজমিন

২৯ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে