সুনামগঞ্জ থেকে : শাল্লা উপজেলার একটি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এ হামলা পূর্বপরিকল্পিত বলে কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। পূর্ব শত্রুতার জেরেই হেফাজত নেতা মামুনুল হকের অনুসারী নাচনি চণ্ডিপুর গ্রামের ইউপি সদস্য স্বাধীন মিয়া সাম্প্রদায়িক উস্কানী দিয়ে হিন্দু অধ্যুষিত নোওয়াগাওয়ে এসে হামলা ও লুটপাট করেছে বলে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে।
তবে এখনো হামলার নেতৃত্বদানকারী স্বাধীন মেম্বরকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় কোন মামলাও দায়ের হয়নি। বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেলে নোয়াগাও গ্রামে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের বাজার ও গ্রামের প্রবেশ মুখে পুলিশের টহল। র্যাব সদস্যরাও টহল দিচ্ছেন। গ্রাম থমথমে। অনেক পরিবারের নারী সদস্যদের বাড়িতে নিয়ে আসেননি স্বজনরা। তবে পুলিশ সুপার গ্রামবাসী যতক্ষণ অনিরাপদ মনে করেছেন ততক্ষণ গ্রামে পুলিশ টহল থাকবে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে গ্রামবাসী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে স্বাধীন মিয়া গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে হেফাজতের সমাবেশ দলবল নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে মামুনুলের সাম্প্রদায়িক বক্তব্যে উৎসাহিত হন স্বাধীন মিয়া ও তার অনুসারীরা। নোয়াগাও গ্রামবাসী জানান, তাদের গ্রামের পাশের একটি জলমহালের ইজারাদার স্বাধীন মিয়া। তিনি গত জানুয়ারি মাসে জলমহাল নীতিমালা উপেক্ষা করে ওই জলমহালটি সেচে মাছ ধরেন।
এতে এলাকার কৃষকদের পানি সেচের সমস্যা দেখা দিলে মামুনুলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টেটাস দেওয়া যুবক গ্রামের ঝুমন দাস আপন স্বাধীন মিয়ার বিরুদ্ধে স্টেটাস দেন ও তার আইনবিরোধী কাজের সমালোচনা করেন। এতে প্রশাসন জলমহাল নীতিমালা উপেক্ষা করে মৎস্য আহরণ করায় স্বাধীন মিয়াকে আর্থিক জরিমানা করে। এতে ক্ষুব্দ হয়ে স্বাধীন মিয়া আপন দাসসহ গ্রামবাসীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
মুক্তিযোদ্ধা অনিল চন্দ্র দাস বলেন, স্বাধীন মেম্বার জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরায় আমাদের গ্রামের লোকজন বাধা দিয়েছিল। প্রশাসন তাকে আর্থিক জরিমানাও করে। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সেই ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা ও লুটপাট করেছে। শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, এ বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সূত্র : কালেরকণ্ঠ