ছাতক (সুনামগঞ্জ): ফেসবুকে লাইভ দিয়ে সমর্থকদের জড়ো করে ফিল্মি কায়দায় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে চলে গেলেন ছাতকের সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল।
মঙ্গলবার বিকালে ছাতকের সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। ছাতকে জাউয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করতে গেলে তিনি এমন কাণ্ড করেনে।
সাহাব উদ্দিন সাহেলের ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ সদস্য সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সাহাব উদ্দিন সাহেলকে গাড়িতে ওঠার জন্য বলেন। এ সময় চেয়ারম্যান সাহেল ফেসবুক আইডিতে ঘটনার প্রচার শুরু করেন। পুলিশ সদস্যরা বার বার তাকে গাড়িতে ওঠার জন্য বলেন।
অন্যদিকে চেয়ারম্যান ফেসবুক লাইভে অন্য একজনকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, এই লাইভ কর, গ্রামের মাইকে ঘোষণা দে।
লাইভে এসে তিনি বলেন, সম্মানিত ইউনিয়নবাসী জাউয়াবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সালামসহ কয়েকজন পুলিশ আমাকে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া নিয়ে যেতে এসেছেন। আপনারা যে যেখানে আছেন লাইভে দেখে ব্যবস্থা নিন। আপনাদের যা করণীয় করুন। পরে তার সমর্থক লোকজন ইউনিয়ন পরিষদে জড়ো হন।
একপর্যায়ে তাকে লাইভে বলতে শোনা যায় মোটরসাইকেল স্টার্ট দিয়ে প্রস্তুত রাখো। পুলিশকে ঘিরে রাখো।
তিনি ওই সময় বলছিলেন, আমি যেখানেই থাকি আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবো। সাহাব উদ্দিন বলেন, তিনি যেখানেই থাকেন না কেন ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।
স্থানীয়রা জানান, লোকজন বেশি জড়ো হওয়ায় পুলিশ এক সময় অসহায় হয়ে পড়ে। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান তার কক্ষ থেকে বের হয়ে পুলিশের সামনেই মোটরসাইকেলে করে সেখান থেকে চলে যান। লোকজন বেশি হওয়ায় পুলিশ তখন তাকে আর ধরার চেষ্টা করেনি।
যুবলীগ নেতা সাহাব উদ্দিন সাহেল এর আগে ২০১৭ সালে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে ফেসবুকে লাইভ করে আলোচনায় এসেছিলেন।
এছাড়া ছাতক-দোয়ারার সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ভাই উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদকে মারধরের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচিত সাহাব উদ্দিন সাহেল।
ছাতক থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া হাসান বললেন, ছাত্র-জনতার মামলায় সাহাব উদ্দিন সাহেলকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিল কয়েকজন পুলিশ। সদর মডেল থানার নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা কম হওয়ায় সমস্যা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, তিনি ফেসবুকে লাইভ করে এবং গ্রামের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকার লোকজন জড়ো করে পরে পুলিশকে লাঞ্চিত করে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।