শাহ্ দিদার আলম নবেল : ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরে আত্মগোপনে থাকা রাগীব আলী এখন যুক্তরাজ্যে পালানোর ফন্দি আঁটছেন। জালিয়াতির মাধ্যমে তারাপুর চা বাগানের ভূমি আত্মসাৎ ও বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের দুটি মামলায় শিল্পপতি রাগীব আলীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ১০ আগস্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এর পরই রাগীব আলী ছেলে, মেয়ে, পুত্রবধূ, নাতিসহ পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসামের শিলচরে পুত্রবধূ সাদিকা জান্নাতের বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি। তবে সেখানে বেশি দিন অবস্থান করতে চান না রাগীব আলী। তার গন্তব্য এবার যুক্তরাজ্য। সেখানেই থিতু হতে চান তিনি। রাগীব আলীর ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছেন। সূত্র জানান, শিলচরে আত্মীয়ের বাড়িতে তার মন টিকছে না। সিলেটের অনেকেরই শিলচরে যাতায়াত থাকায় সেখানে আত্মগোপন করে থাকা নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন তিনি।
সূত্র আরও জানান, রাগীব আলী, তার ছেলে আবদুল হাই, পুত্রবধূ সাদিকা জান্নাত, মেয়ে রুজিনা কাদির ও নাতির যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে। ভারতে যাওয়ার সময় তারা সঙ্গে করে যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টও নিয়ে গেছেন। রাগীব আলীর অনেক আত্মীয়, শুভাকাঙ্ক্ষীও যুক্তরাজ্যে বাস করছেন। ফলে পালিয়ে থাকার জন্য যুক্তরাজ্যকেই নিরাপদ জায়গা বলে মনে করছেন রাগীব আলী। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব তিনি সেখানে পাড়ি জমাতে চাইছেন।
সূত্র জানান, রাগীব আলী শিলচরে বসে তার মামলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। হুট করে দেশ ছাড়ায় তিনি তার বিশাল সহায়সম্পদের কোনো কূলকিনারা করে যেতে পারেননি। এজন্য তিনি চাইছেন কিছুদিন পর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি আড়ালে পড়ে গেলে তিনি গোপনেই দেশে ফিরবেন। এর আগে তিনি তার জামাতা আবদুল কাদিরের জামিনলাভের চেষ্টা চালাবেন। নিম্ন অথবা উচ্চ আদালত থেকে জামাতার জামিন নেওয়া সম্ভব হলে গোপনে দেশে ফিরতে চান রাগীব আলী। ওই সময় তিনি তার সহায়সম্পদ কাদিরকে বুঝিয়ে দিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করবেন।
এদিকে, গতকাল রাগীব আলীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির দুটি মামলার চার্জ গঠনের কথা ছিল। তবে মামলাগুলোর কাগজপত্র প্রস্তুত না হওয়ায় চার্জ গঠনের তারিখ পিছিয়েছে। সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য হাকিম সরাবন তাহুরা চার্জ গঠনের জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। সিলেটের তারাপুর চা বাগানের ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জমি পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। আশির দশকে রাগীব আলী জালিয়াতির মাধ্যমে এ বাগান দখলে নেন। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি বাগানে রাগীব আলীর দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে আপিল বিভাগ। - বিডি প্রতিদিন
২৪ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস