রাহিব ফয়ছল, সিলেট প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সফর ঘিরে পুরো শহর জুড়ে চলছে সাজ সাজ রব। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে আনন্দের আমেজ। আগামী ২৩ নভেম্বর বুধবার শেখ হাসিনা আসবেন সিলেটে। তাঁর এ আগমন ঘিরে ইতোমধ্যে পুরো শহর ছেয়ে গেছে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর তোরণে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের ধারণা, প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন মোড় ও সড়ক সাজানো হচ্ছে। সফর উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকভাবে এটি দ্বিতীয় সফর। যদিও প্রধানমন্ত্রী এর মধ্যে বেশ কয়েকবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করে দলীয় নেতাদের দিঙ্নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা গত ২১ জানুয়ারি সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন। ১১ মাস পর তিনি একই স্থানে ভাষণ দেবেন। তবে সে বারের সফরের চেয়ে এবারের সফর ঘিরে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে প্রতিদিনই জনসভা সফলের লক্ষ্যে চলছে সভা সমাবেশ।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের একটি অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
শনিবার আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদসহ কেন্দ্রীয় যুবলীগের দুশতাধিক নেতাকর্মী সিলেট বিভাগের যুবলীগ নেতাকর্মীদের সাথে সভা করেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের কোনো পদে নেই, এরকম অনেক দাগি সন্ত্রাসীও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে নগরীতে বিলবোর্ড ও ফেস্টুন লাগিয়েছেন। দলের অনেক নেতাকর্মী এতে বিব্রতবোধ করছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সিলেটের মহানগর পুলিশ। ২২ নভেম্বর থেকেই সিলেটে ছয় স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ উপলক্ষ্যে সভাও করেছে নগর পুলিশ। সভায় রাজনীতিবিদ, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান (বিপিএম) জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এসএমপির মূখপাত্র ও এডিসি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেছেন, মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ছয় স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। রোববার এসএসএফের সাথে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনও। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ৭টি বড় বিলবোর্ড নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লাগাবে সিসিক কর্তৃপক্ষ। সিসিকের পক্ষ থেকে আলিয়া ় মাদ্রাসার মাঠ প্রস্তুত করা, মাঠের চারপাশে রঙ করা, চৌহাট্টা থেকে রিকাবিবাজারে ডিভাইডারগুলোতে নতুনভাবে রং ও আলোকিতকরণ, নজরুল চত্বর আলোকিত ও রংকরণ, জালালাবাদ পার্ক রংকরণ, নগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিষ্কার, রিকাবিবাজার সড়কে ছোট ছোট খানাখন্দর ভরাট, মাজার রোডে ডিভাইডার স্থাপন করার কাজ চলছে।
এছাড়া রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার সিসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন ফুটপাতে ভাসমান ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সিসিক কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দিন সভাস্থলে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব।
২০ নভেম্বর,২০১৬/এমটি নিউজ২৫ ডটকম/এইচএস/কেএস