সিলেট থেকে : গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারী হওয়া সিলেটের ব্যবসায়ী রাগিব আলীকে আজ দুপুরে বাংলাদেশের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ সদস্যরা। সিলেটের বিয়ানীবাজারের সুতারখালী সীমান্ত এলাকায় বেলা আড়াইটার পরে বাংলাদেশের পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে ভারত।
এর আগে আসামের করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, রাগিব আলীর ভারতীয় ভিসার মেয়াদ আজই শেষ হচ্ছে। আমরা জানতে পেরেছি বাংলাদেশে তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারী আছে, সেজন্যই ভিসার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। আজই রাগিব আলীকে হস্তান্তর করা হবে।
ছেলে, মেয়ে এবং জামাইসহ ভারতে গিয়েছিলেন রাগিব আলী। এর আগে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে রাগিব আলির ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। করিমগঞ্জের পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট বলেন, তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা তারা তখন জানতেন না।
তিনি আরো বলেন, তখন আমরা জানতাম না যে বাংলাদেশ পুলিশ তাকে খুঁজছে। সেই খবর পাওয়ার পরে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে আমরা নিশ্চিত হই যে সত্যিই তাকে সেদেশে খোঁজা হচ্ছে। তখনই আমি মতামত পাঠিয়ে দিই ওপর মহলে, যাতে রাগিব আলীর ভিসার মেয়াদ আর বাড়ানো না হয়।
এদিকে রাগিব আলীকে হস্তান্তর করার বিষয় নিশ্চিত করেছেন সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী। ওসি চন্দন কুমার বলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজারের সুতারখালী সীমান্ত এলাকায় বেলা আড়াইটার পরে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে রাগিব আলীকে হস্তান্তর করে ভারতীয় পুলিশ। এরপর বিশ্বনাথ থানা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয় রাগিব আলীকে।
উল্লেখ্য, সিলেটের তারাপুর চা-বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তি ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি করে বন্দোবস্ত নেন রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই। এ ঘটনায় ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেটের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল কাদের বাদী হয়ে রাগীব আলী ও আবদুল হাইকে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করে।
গত ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান পুনরুদ্ধারের রায় দেন। এ রায়ে ১৭টি নির্দেশনার মধ্যে এ মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশও দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মহানগর বিচারিক হাকিম আদালত এক আদেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
গত ১০ জুলাই রাগীব আলী ও ছেলেকে অভিযুক্ত করে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। ১০ আগস্ট দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে পরদিন ১১ আগস্ট তারা ভারতে পালিয়ে যান। এ অবস্থায় দুই আসামির অনুপস্থিতিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যদিয়ে বিচার শুরু হয়।
২৪ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি