সিলেট : সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে একজনের অপরাধে অন্যজন জেল খাটার (বদলি বন্দি) ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর কারাগার পরিদর্শনে গেছেন জেলা ও দায়রা জজ মো. মনির আহমদ পাটোয়ারি।
শনিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে কারাগারে প্রবেশ করেন তিনি। বেলা ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ কারাগারের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন। এর আগে কারাগারে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ছগির মিঞা।
সিলেটের জেলা ও দায়রা জজের সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যাওয়ার বিষয়টি করেছেন কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ছগির মিঞা।
গত ১৭ জানুয়ারি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে একজনের অপরাধে অন্যজন জেল খাটার (বদলি বন্দি) ঘটনায় গঠিত বিচারিক কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমেদ পাটোয়ারির কাছে জমা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আব্দুল হান্নান ও যুগ্ম জেলা জজ মো. রেজাউল করিমের সমন্বয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি ৮ জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু করেছিলেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজার আসামির হয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে কারাগারে এক বছরের চেয়ে বেশি সময় ধরে বন্দি রয়েছেন রিপন আহমদ ভুট্টো নামের এক ব্যক্তি। আসামিপক্ষের যোগসাজশে ঘটনাটি ঘটলেও তিনি এখন মুক্তির জন্য ব্যাকুল। একই সঙ্গে যারা তাকে ফুঁসলিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে, তাদেরও বিচার চান তিনি।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তার মুক্তির বিষয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া কারা কর্তৃপক্ষও ভুট্টোকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন জানিয়েছে।
সিলেটের সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের আলোচিত আলী আকবর সুমন হত্যামামলার আসামি সেজে জেল খাটছেন ভুট্টো। তিনি সিলেট নগরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ মুগনী তরঙ্গ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। মূল সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইকবাল হোসেন বকুল বর্তমানে সৌদি আরবে পালিয়ে রয়েছেন বলে তার পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরী থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন আলী আকবর সুমন (২৪)। পরদিন মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের পাশে ঝিলকার হাওরে কচুরিপানার নিচে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় নিহতের ছোট ভাই আলী আহসান সুহেল বাদি হয়ে মামলা করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২০ জুন কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই মারুফ হাসান ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। শুনানি শেষে ২০১২ সালের ২০ জুন আলোচিত ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথ। মামলার চার্জশিটভুক্ত ৯ আসামির মধ্যে তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, হাউসা গ্রামের মৃত মছকন্দর আলীর ছেলে দরাছ মিয়া ওরফে গয়াছ ও তার স্ত্রী রুজিনা বেগম এবং একই গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন বকুল। অবশ্য বাকি আসামিদের খালাস দেয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামিই পলাতক ছিলেন। বছরখানেক আগে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বকুলের আদালতে আত্মসমর্পণ নিয়েই ভুট্টো ও বকুল নাটকের শুরু। -জাগো নিউজ।
২১ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম