রাহিব ফয়ছল, সিলেট প্রতিনিধি : ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় সোহেল মিয়া (৩৫) নামের আরেক ব্যক্তি মারা গেছেন। নিহত সোহেল মিয়ার বাড়ি ওসমানীনগর উপজেলার কালিরচর গ্রামে।
সোমবার সকাল ৭টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন মারা গেলেন।
ওসমানীনগর থানার ওসি আবদুল আউয়াল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার সকালে উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার হাতানিপাড়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাইফুল ইসলাম (১৮) নামের এক কিশোর। গুরুতর আহত হন আরো ১৬ জন। আহতদের মধ্যে সোহেল মিয়াও ছিলেন। গুরতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
জানা যায়, নিহত সোহেল মিয়া কোনো পক্ষের সমর্থক ছিলেন না। সংঘর্ষে দুই পক্ষের সমর্থকদের পাশাপাশি কয়েকজন গ্রামবাসী আহত হন। সোহেল মিয়া ছিলেন গ্রামবাসীদের একজন।
ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ মার্চ। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান চৌধুরী (জগলু চৌধুরী) বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির মো. শিব্বির আহমদও চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জগলু চৌধুরী শনিবার বিকেলে নির্বাচনী প্রচারে বের হন। তিনি সাদীপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজারে গণসংযোগ করেন। এসময় তার সঙ্গে সাদীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা কবির উদ্দিন, আরজু মেম্বার ও তার ভাই বাহার মিয়া সঙ্গে ছিলেন।
এক পর্যায়ে বাজারের একটি চা দোকানে থাকা জগন্নাথপুর উপজেলার উত্তর কালনীচরের আল-আমিনসহ ছয় যুবককে জগলু চৌধুরীর পক্ষে কাজ করতে বলে তার সমর্থকরা। কিন্তু ওই তরুণেরা নিজেদের আতাউর রহমানের সমর্থক বলে জানান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বিষয়টি সমাধানে রবিবার সকালে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়। সকালে সালিশ চলাকালে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, নিহত সাইফুল ছিলেন আল-আমিনের সঙ্গে। সংঘর্ষের সময় তিনি কয়েকজনকে নিয়ে মিছিল শুরু করলে তাদের লক্ষ্য করে কে বা কারা গুলি ছোড়ে।
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস