সিলেট থেকে: সিলেটের সবজি বিক্রেতা শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের করা আপিলের ওপর আজ মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
গত ১২ মার্চ মামলার ১৯তম দিনের শুনানি শেষ করার পর আদালত রায় ঘোষণার জন্য ১১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করেন রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও বিলকিস ফাতেমা।
আসামিপক্ষে ছিলেন এস এম আবুল হোসেন, বেলায়েত হোসেন, শাহরিয়ায় ও শহিদ উদ্দিন চৌধুরী। পলাতক এক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত হিসেবে ছিলেন আইনজীবী হাসনা বেগম।
গত বছরের ১০ নভেম্বর রাজন মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। ৩০ জানুয়ারি শুনানি শুরু হয়। মোট ১৯ দিন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম জানান, রাজন হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ১০ আসামির মধ্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তিনজনের সাত বছর করে এবং অপর দু’জনের এক বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
পলাতক পাভেল আহমেদ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি আপিল ও জেল আপিল করেছেন। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নূর মিয়ার আপিলের ওপর শুনানি হয়েছে।
সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শেখপাড়া এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ গুম করার সময় ধরা পড়েন একজন। এরপর পুলিশ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করে।
এদিকে, ফেসবুকে প্রচারের উদ্দেশে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে নির্যাতনকারীরা। পরে তা ভাইরাল হয়ে পড়েল দেশজুড়ে তোলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরে তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৬ আগস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ১৭ কার্যদিবস বিচারিক কার্যক্রম শেষে ওই বছরের ৮ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেন।
রায়ে আসামিদের মধ্যে কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল আহমদের ফাঁসির আদেশ হয়। কামরুলের সহযোগী নূর মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে (পলাতক) সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক বছর করে কারাদণ্ড হয় দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীর।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম.জে